একই দিনে দেশের রাজনীতিতে অন্যতম আলোচিত দুই ব্যক্তিত্ব সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন। উদ্দেশ্য অবশ্য একটাই। দুইজনেই চিকিৎসার জন্যই মূলত বিদেশে যাচ্ছেন। তারা হলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ও প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও একাদশ জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ।
আজ রোববার পৃথক পৃথক সময়ে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন।
ড. কামাল হোসেন এর আগেই গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ২০ জানুয়ারি প্রথম প্রহরে তিনি সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়বেন। দেশে ফিরবেন তিনি ২৫ বা ২৬ জানুয়ারি।
শনিবার সন্ধ্যায় গণফোরামের সেক্রেটারি মোস্তফা মোহসীন মন্টু গণমাধ্যমকে বলেন, আজ মধ্য রাতে স্ত্রী হামিদা হোসেনসহ ড. কামাল সিঙ্গাপুর যাবেন।
এদিকে অসুস্থতার কারণে রোববার বেলা ১২টায় সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার সঙ্গে দলের কয়েকজন বিশ্বস্ত নেতাও যেতে পারেন। ইতোমধ্যে তিনি ছোট ভাই জি এম কাদেরকে নিজের অনুপস্থিতিতে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।
এরশাদের শারীরিক অবস্থা ভাল নেই, তার শরীর খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। রক্তে হিমোগ্লোবিন ও যকতের সমস্যা আছে বলেও জানা গেছে।
ফলে আগামী ৩০ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হলেও তাতে এরশাদের যোগদানের সম্ভাবনা ‘সামান্যই’ বলে মনে করছেন দলটির সিনিয়র নেতারা।
এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির দপ্তর সম্পাদক সুলতান মাহমুদ গতকাল শনিবার এ তথ্য জানিয়ে বলেন, রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্যার (এরশাদ) সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের পরামর্শের অপেক্ষায় ছিলেন তারা। পরে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেই এরশাদকে আবারও সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরশাদের শারীরিক অবস্থা ‘খুব ভালো নেই’ জানিয়ে তিনি বলেন, স্যারের সঙ্গে তার এক ভাই ও একান্ত সচিব খালেদ আখতারও যাবেন।
প্রসঙ্গত. একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ‘উন্নত চিকিৎসার জন্য’ সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন এরশাদ। জয়ী হওয়ার পর দেশে ফিরে শপথও নেন। কিন্তু এরপর থেকেই তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন।
এদিকে গত শুক্রবার এরশাদ এক ঘোষণাপত্রে জানিয়েছেন, এরশাদের অবর্তমানে এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিদেশে থাকাকালীন সময়ে তার অনুপস্থিতিতে ছোট ভাই পার্টির বর্তমান কো-চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলের উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/১/ক ধারা মোতাবেক চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ গত ১৬ জানুয়ারি এ নিয়োগ প্রদান করেন, যা ইতোমধ্যেই কার্যকর হয়েছে।
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদে এরশাদকে বিরোধী দলীয় নেতা করে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়। একই সঙ্গে প্রজ্ঞাপনে জিএম কাদেরকে সংসদীয় বিরোধী দলের উপনেতা ও মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাকে বিরোধী দলের চীফ হুইপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।