সুন্দর ত্বক কে না চায়? অনেকেই ত্বকের ব্যাপারে বেশ সেনসেটিভ। যেভাবেই হোক ত্বক সুন্দর রাখতে হবে। এর জন্য বাড়তি যত্নও নিয়ে থাকেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অর্থকড়িও খরচ করেন অনেক। ত্বক ভালো রাখতে কৃত্রিম প্রসাধনীর চেয়ে খাবারের দিকে নজর দেওয়াটাই উত্তম পন্থা। কারণ প্রসাধনীর চেয়েও ত্বকের জন্য বেশি জরুরি হলো ভেতর থেকে পুষ্টি লাভ। ত্বক যদি ভেতর থেকে পুষ্টি না পায় তাহলে হাজার প্রসাধনী ব্যবহার করলেও ত্বক নির্জীব দেখাবে।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, সঠিক খাবার ত্বকের সমস্যা থেকে আপনাকে বাঁচাতে সাহায্য করে। এমন কিছু খাবার আছে যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এ খাবারগুলো আপনার হাতের কাছে থাকে। প্রতিদিনের মেন্যুতে এ খাবারগুলো রাখলে আপনার ত্বক পুষ্টি লাভ করবে, ত্বক হবে সুন্দর ও উজ্জ্বল।
এবার জেনে নেই ত্বকের জন্য উপকারী খাবারগুলো :
কলা
কলা ত্বক ভাল রাখার জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-এ, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। পাশাপাশি এটি ত্বকের মলিনভাব দূর করতেও সাহায্য করে।
গাজর
গাজরে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন আছে, যা শরীরে গিয়ে ভিটামিন-এ তে পরিণত হয়। নিয়মিত গাজর খেলে আপনার ত্বক থাকবে সজীব ও উজ্জ্বল। গাজর ত্বকের টিস্যুগুলোকে মেরামত করে এবং ক্ষতিকর সূর্য রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
পানি
ত্বক ভালো রাখতে বেশি করে পানি পান করার বিকল্প নেই। প্রতিদিন অন্তত দেড় থেকে দুই লিটার পানি বা পানিযুক্ত খাদ্য খাওয়া উচিত। পানি ত্বকের ভাঁজ দূর করার পাশাপাশি শরীরে চিনি জমতে দেয় না। শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান ঘামের মাধ্যমে বের করে দেয় পানি। পর্যাপ্ত পানি পেলে ত্বকের কোষে পানি পৌঁছায় এবং ত্বক সজীব দেখায়। পরিমিত পানি খেলে ব্রণের উপদ্রবও কমে।
বাদাম
বাদাম ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এবং ভিটামিন-ই এর একটি অন্যতম উৎস। নিয়মিত খাবারের তালিকায় বাদাম রাখলে এর পুষ্টি উপাদানগুলো ত্বককে আরও সজীব ও মোহনীয় করে তুলবে।
ভিটামিন-সি যুক্ত ফল
ভিটামিন-সি যুক্ত ফলফলাদি ত্বকের সজীবতার জন্য জরুরি। নিয়মিত ফলমূল খেলে ত্বক ভালো থাকে। পেয়ারা, আনারস, পেঁপে, নানা রকম বেরি জাতীয় ফল ইত্যাদি ত্বককে ভালো রাখে এবং সহজে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।
জিরা
জিরায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরে জমে থাকা দূষিত উপাদান দূর করতে সাহায্য করে। শরীরে দুষিত পদার্থের পরিমাণ বেড়ে গেলে ত্বকে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। ব্রণ ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় জিরা রাখা উচিত।
মিষ্টি কুমড়া
ত্বকের যত্নে সবজি হিসেবে মিষ্টি কুমড়া অনেক উপকারী। মিষ্টি কুমড়ায় থাকা বিটা ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে। ত্বককে সজীব, নরম ও সতেজ রাখতে সক্ষম মিষ্টি কুমড়া। তাই খাবারে মিষ্টি কুমড়া অবশ্যই রাখবেন।
করলা
করলায় রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ যা স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বকের জন্যও উপকারী। করলা ত্বকের রংয়ের অসমতা দূর করার পাশাপাশি উজ্জ্বলতা বাড়াতেও সাহায্য করে। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন-সি যা কোষের ক্ষতি পুষিয়ে ত্বক সুস্থ্য রাখতে উপযোগী। তাছাড়া করলা কোলাজেন গঠনেও সহায়ক।
কুমড়ার বীজ
মিষ্টি কুমড়ার বীজ ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে। জিঙ্ক ত্বকের কোষগুলোকে সজীব করে এবং ভেতর থেকে পুষ্টি যোগায়। তাই নিয়মিত কুমড়ার বীজ খেতে পারলে ত্বক থাকবে সজীব ও প্রাণবন্ত।
ব্রোকলী
ব্রোকলীতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি, ই এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বকে গভীর থেকে পুষ্টি যোগায়। ভিটামিন-ই সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মির ক্ষতি থেকেও ত্বককে রক্ষা করে।
মাছ
মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাট থাকে যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এই মাছ ত্বকের কোষ সজীব রাখে এবং ত্বককে ক্যান্সারের থেকে রক্ষা করে।
গ্রিন টি
গ্রিন টির অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত গ্রিন টি পানের অভ্যাস ত্বকে ব্রণের সমস্যা কমায় এবং বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে।
কফি
কফি পান করলেও ত্বকের ক্ষেত্রে উপকার পাওয়া যেতে পারে। তবে কফি পানের পরিমাণ যেন মাত্রাতিরিক্ত না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
ত্বকের বাহ্যিক সৌন্দর্য নির্ভর করে ভেতরের সুস্থতার উপর। তাই ত্বকের জন্য উপকারী খাবারগুলো নিয়মিত খাবেন এবং প্রচুর পানি পান করুন। তাহলে আপনার ত্বক কোনো রকমের প্রসাধনী ছাড়াই হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও লাবণ্যময়। এ খাবারগুলোর দামও কিন্তু বেশি নয়। সেই দিক থেকে আপনার অর্থও সাশ্রয় হচ্ছে।