করোনা মহামারীর কারণে ১১ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় স্বশরীরে ক্লাসে উপস্থিত হতে পারছেন না তারা। এতে পরীক্ষা আটকে গিয়ে সেশন জটের কবলে পড়েছেন ওইসব শিক্ষার্থী। অনলাইনে তত্ত্বীয় ক্লাসগুলো সম্পন্ন হলেও ব্যবহারিক ক্লাস না হওয়ায় গ্রাজুয়েশন আটকে গেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) চতুর্থ বর্ষের হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবহারিক ক্লাসগুলো শেষ করে পরীক্ষা গ্রহণের দাবি শিক্ষার্থীদের।
জানা যায়, গত বছরের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে স্থবির হয়ে পড়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। দীর্ঘ বিরতির পর ওই বছরের অক্টোবরে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে শুরু হয় স্নাতক পর্যায়ের অনলাইন ক্লাস। অনলাইনে শুধুমাত্র তত্ত্বীয় ক্লাসগুলো পরিচালিত হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে শিক্ষার্থীদের স্বশরীরে ব্যবহারিক ক্লাস করানোর কথা জানানো হয় তখন। তবে করোনা মহামারীর কারণে ফেব্রুয়ারিতেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলায় ব্যবহারিক ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। এতে পরীক্ষা আটকে গিয়ে সেশন জটের কবলে পড়েছেন তারা।
কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন জনি বলেন, করোনার কারণে ইতোমধ্যেই আমরা ১ বছর পিছিয়ে গেছি। অনলাইনে তত্ত্বীয় ক্লাসগুলো যথাযথভাবে শেষ হলেও ব্যবহারিক ক্লাসগুলো করা সম্ভব হয়নি। আমাদের ব্যবহারিক ক্লাসগুলো এমন যে স্বশরীরে উপস্থিত থাকা ব্যতীত সম্ভব হয়ে উঠে না। ব্যবহারিক ক্লাস শেষ না হওয়ায় আমরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছি না। আমরা চাই অতিদ্রুত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবহারিক ক্লাসগুলো শেষ করে আমাদের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হোক।
জানা যায়, বাকৃবিতে মাস্টার্সের এপ্রিল-সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর-মার্চ দুই সেমিস্টার পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। করোনা মহামারীতে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করতে না পারায় এপ্রিল-সেপ্টেম্বর সেমিস্টারে ভর্তি হতে পারছেন না। শিক্ষা কার্যক্রম আরো অধিক সময় বন্ধ থাকলে অক্টোবর-মার্চ সেমিস্টারে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে তাদের। এতে সেশন জটের সাথে মাস্টার্সে ভর্তির বিষয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
ক্লাস চালুর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এ কে এম জাকির হোসেন বলেন, কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার সাথে কথা বলেছে। আমরাও তাদের ব্যবহারিক ক্লাসগুলো চালুর বিষয়ে আন্তরিক। ডিন কাউন্সিলের মিটিংয়ে আমরা বিষয়টি তুলবো। যতদ্রুত সম্ভব আমরা তাদের ক্লাসগুলো শুরু করবো।
তবে সকল সমস্যা ছাপিয়ে ক্লাসে ফিরতে চান বিশ্বিবিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।