একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভের পর আজ ‘বিজয় উৎসব’ করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ উপলক্ষে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে দলটি। এতে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সমাবেশ থেকে তিনি আগামী দিনে দল ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরবেন সমাবেশে। নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ সরকারবিরোধী জোটের নানা সমালোচনার জবাব দিবেন তিনি। এ ছাড়া দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিজের সরকারের বিভিন্ন অঙ্গীকার তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী। উন্নত দেশগঠনে দলের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতাও কামনা করতে পারেন শেখ হাসিনা।
নির্বাচনের পর বড় পরিসরে প্রথম আয়োজিত এই কর্মসূচিতে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন আওয়ামী লীগ ও সরকারের নীতিনির্ধারকেরা। বৈঠক হয়েছে ঢাকার আশপাশ জেলা নেতাদের সাথেও। এসব বৈঠক থেকে সমাবেশে সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট নেতাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রাজধানী ও এর আশপাশ ছাড়াও সারা দেশ থেকেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। সমাবেশে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা ছাড়াও সুশীলসমাজ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ নাগরিক সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ের মাধ্যমে টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৫৭টি এবং দলটির নেতৃত্বে মহাজোট ২৮৮টি আসনে জয় লাভ করে। এর মাধ্যমে দলের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। একইসাথে তিনি প্রধানমন্ত্রীর আসনে অধিষ্ঠিত হন টানা তৃতীয়বারের মতো এবং সব মিলিয়ে চতুর্থবার।
এমন বিশাল বিজয়ের পরও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো উদযাপন করেনি আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বিজয়োল্লাস বা আনন্দ র্যালি না করতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়। আজকের মহাসমাবেশের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয় উদযাপন করতে যাচ্ছে দলটি।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সাথে আলাপকালে জানা গেছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশে ঢাকা মহানগরসহ আশপাশ জেলা, এমনকি সারা দেশ থেকে দলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকেরা যোগ দেবেন। বেলা ২টায় মহাসমাবেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হবে। এর আগে সকাল থেকেই সমাবেশস্থল উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। সমাবেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও পর্ব থাকছে।
নেতারা জানান, সমাবেশ উপলক্ষে রাজধানীতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এক সপ্তাহ ধরে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। আলাদা আলাদা সভা হয়েছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, ঢাকার পার্শ্ববর্তী ছয়টি জেলার নেতা এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর নেতাদের সাথেও। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ মহানগরীর অন্তর্গত থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নগুলোতেও প্রস্তুতি সভা হয়েছে। একাধিকবার সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা।
গতকাল সকালে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরীকে জনসমুদ্রে পরিণত করা হবে। নির্বাচনে যেমন আওয়ামী লীগের পক্ষে গণজোয়ার হয়েছিল ঠিক আগামীকালের (আজ শনিবার) সমাবেশেও বড় জোয়ার সৃষ্টি হবে।