কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে কৃষক ছিদ্দিক হত্যা মামলায় এক আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত -১ এর বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে প্রত্যেক আসামিকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন বাজিতপুর উপজেলার বরমাইপাড়া গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া (২৭)। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন আসামি জুয়েলের বাবা জজ মিয়া (৫২), মা রহিমা খাতুন (৪৭), জুয়েলের ছোট ভাই কাকন (২), একই গ্রামের মজলু মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৫) ও জয়নাল আবেদীনের ছেলে মাহবুব হাসান রঞ্জু (৩৫)। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাইফুল ও কাকন পলাতক রয়েছেন।
এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, বাজিতপুরের বরমাইপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলাচলের রাস্তা নিয়ে বাদী এবং আসামি পক্ষের মধ্যে বিরোধ ছিল। ২০১৬ সালের ২২ জানুয়ারি দুপুরে আসামিরা রাস্তার উপর বাথরুম নির্মাণ করতে থাকে। বাদী মনিরুজ্জামানসহ অন্যান্যরা বাধা দিলে আসামিরা বাদীকে গালিগালাজ এবং মারপিট করার চেষ্টা করে। এ সময় বাদীর ভাই ছিদ্দিক মিয়া প্রতিবাদ করলে আসামিরা তাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। তারা ছিদ্দিক মিয়াকে শাবল, লোহার পাইপ ও রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। গুরুতর আহত অবস্থায় ছিদ্দিক মিয়াকে উদ্ধার করে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। পরে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকায় নেওয়ার পথে নরসিংদী এলাকায় তিনি মারা যান। ২৩ জানুয়ারি ছিদ্দিকের ভাই মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে বাজিতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। সিআইডির উপ পরিদর্শক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করে ২০১৬ সালের ৩০ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আবু সাঈদ ইমাম বলেন, এই রায়ে বাদীপক্ষ সন্তুষ্ট। বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছে।
অপরদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী অশোক সরকার বলেন, এই মামলায় আসামিরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আইনের বিধানমতে আসামিরা খালাস পাওয়ার যোগ্য। আসামিরা খুবই দরিদ্র। তারা যদি মাননীয় হাইকোর্টে আপিল দায়ের করতে পারেন আমার ধারণা তারা ন্যায়বিচার পাবেন।