এ বছরের শুরু থেকে প্রায় ১৩০০ রোহিঙ্গা মুসলিম ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। একজন কর্মকর্তা বুধবার এ কথা জানিয়েছেন। মিয়ানমারে যখন নতুন করে রোহিঙ্গা বিতাড়নের ভীতি সৃষ্টি হয়েছে, সে সময়ে এমন ঘটনা ঘটলো।
গত কয়েক মাস ধরে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত দেয়া নিয়ে প্রচণ্ড সমালোচনার মুখে আছে ভারত। মিয়ানমারে সংখ্যালঘু গোষ্ঠী যখন জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে বেশ শঙ্কিত তখন ভারতের এমন উদ্যোগকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলছে জাতিসঙ্ঘ ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। অবশ্য ভারত জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী কনভেশনে স্বাক্ষর করা দেশ নয়।
ভারতে ২০১৮ সালে সেখানে আশ্রয় নেয়া ২৩০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে, যা বিগত বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। দেশটির হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে ব্যাপক সোচ্চার রয়েছে।
সাউথ এশিয়া হিউম্যান রাইটস ডকুমেনটেশন সেন্টারের (এসএএইচআরডিসি) কর্মকর্তা রাভি নাইর আল জাজিরাকে বলেন, ‘গত বছর থেকে ভারত সরকার দেশটিতে রোহিঙ্গাদের জীবন খুবই কঠিন করে তুলেছে’।
নাইর বলেন, ‘স্থানীয় গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন রোহিঙ্গাদের নিয়মিত খবর নিতে থাকেন, কাগজপত্রের জন্য তাদের হয়রানির শিকার হন অনেক রোহিঙ্গা। আমাদের হিসাব মতে, জম্মু ও ত্রিপুরা, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে দুই শতাধিক রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের জেলে রাখা হয়েছে।’
বাংলাদেশে প্রায় ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গা স্থান পেয়েছে। ভারতের এ ধরনের উদ্যোগে বাংলাদেশ স্থান পাওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝেও একটা আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
জাতিসঙ্ঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করা ইন্টার সেক্টর কোঅর্ডিনেশন গ্রুপের (আইএসসিজি) মুখপাত্র নায়ানা বোস জানিয়েছেন, গত ৩ জানুয়ারির পর থেকে এ প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘আজ পর্যন্ত ৩০০ পরিবারের ১৩০০’র মতো ব্যক্তি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে’, বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন তিনি।
ইউএনএইচসিআর মুখপাত্র ফিরাস আল-খাতিব বলেন, জাতিসঙ্ঘ শরণার্থী সংস্থা ‘এ পরিস্থিতির ব্যাপারে সজাগ’।
সাম্প্রতি সপ্তাহগুলোতে সীমান্ত পার হওয়া এসব ব্যক্তিদের পুলিশ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল কক্সবাজারের বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী ক্যাম্পে নিয়ে যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বাংলাদেশের পুলিশ জানিয়েছে, সীমান্ত পার হয়ে যারা বাংলাদেশে আসছে তাদের অনেকেই বহু বছর ধরে ভারতে বসবাস করে আসছিল।