অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা

কামরুন নাহার হাউসীবগুড়ার সোনাতলায় সোমবার জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের মারপিটে কামরুন নাহার হাউসী (২২) নামে অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। তিনি সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের মধ্য দিঘলকান্দী গ্রামের রঞ্জু মিয়ার স্ত্রী।

এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১০জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ওই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১ নারীকে আটক করেছে।

স্থানীয়রা ও পুলিশ জানায়, সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের মধ্য দিঘলকান্দী গ্রামের ছামেদ আলীর প্রামানিকের ছেলে নান্নু মিয়ার সঙ্গে একই গ্রামের জবেদ আলী প্রামানিকের ছেলে ইব্রাহীম হোসেনের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। এমনকি ওই জমি নিয়ে আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলাও রয়েছে। এরই এক পর্যায়ে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নান্নু আকন্দ ও তার লোকজন বিরোধপূর্ণ ওই জমি দখল করতে যান। এ সময় ইব্রাহীম ও তার লোকজন বাধা দেয়। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ইব্রাহীম হোসেনের ভাতিজি ও রঞ্জু মিয়ার ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী কামরুন নাহার হাউসী এগিয়ে এলে প্রতিপক্ষের লোকজনের লাঠির আঘাতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয়। এছাড়াও প্রতিপক্ষের মারপিটে আব্দুল কাদের (৬০), ইব্রাহীম হোসেন (৪৫), জরিনা বেগম (৫৮), রনজিনা বেগম (৫৫), কাজলী বেগম (২৫), সুলতান মিয়া (১৮), মোতালেব হোসেন (১৪) হন। অপর পক্ষের (নান্নু গ্রুপের) আব্দুল মান্নান (৪৮) ও নান্নু মিয়াও (৪২) আহত হন। এসময় স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কামরুন নাহার হাউসীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুপুরে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হাউসীর মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা নান্নু মিয়া ও তার আত্মীয়স্বজনের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। অপরদিকে এ ঘটনার পরপরই নান্নু ও তার লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নান্নু মিয়ার স্ত্রী মাইমুন বেগমকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।

পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে বগুড়ার শিবগঞ্জ ও সোনাতলা সার্কেলের এএসপি আরিফুর রহমান সিদ্দিকী ও সোনাতলা থানার ওসি রেজাউল করিম রেজা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা অবধি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করায় সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম রেজা জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শজিমেকের মর্গে রাখা রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে আছে।

Share this post

scroll to top