নিরাপদ সড়ক চাই’র (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে ‘বেকুব’ মনে করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাজাহান খান এমপি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহীতে ফেডারেশনের বিভাগীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শাজাহান খান সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ নিয়ে শ্রমিকদের উদ্দেশে কথা বলছিলেন। এ সময় তিনি বলেন- বাংলাদেশে কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন, যে বুদ্ধিজীবীরা পরিবহন শ্রমিকদের দেখতে পারে না। তারা মনে করে যে, পরিবহন শ্রমিকদের ফাঁসি দিলেই বোধহয় দুর্ঘটনা সব বন্ধ হয়ে যাবে। বাংলাদেশে এটা যারা বলেন, তারা হাস্যকর কথা বলছেন। পৃথিবীতে বহু দেশেই তো হত্যা যারা করেন, ফাঁসির আইন আছে না? তার জন্য কি খুন বন্ধ হয়ে গেছে?
শাজাহান খান বলেন, সড়ক পরিবহন আইনটি একটা প্রেক্ষাপটে তাড়াহুড়ো করে পাস করতে হয়েছিল। ঢাকায় একজন ছাত্র এবং একজন ছাত্রী গাড়িচাপায় যে মারা গেল মহাখালীতে, তার পরের পরিস্থিতি আপনাদের জানা আছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রছাত্রীরা তখন আন্দোলন করছিল। ওই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী বললেন- আইন আমরা কঠোরভাবে পাস করব। আইন সেদিন পাস করতে হলো। সেই আন্দোলন প্রশমিত হলো। আইন যেটা পাস হলো তার অসঙ্গতিগুলো আমরা তুলে ধরেছি।
তিনি বলেন, যুগোপযোগী আইন করার জন্য ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আমরাই কিন্তু দাবি তুলেছিলাম। এরশাদ সাহেবের শাসনামল থেকে আমরা বলে আসছি যুগোপযোগী আইন করতে হবে। তারপর অনেক সরকার পার করলাম। শেখ হাসিনার সরকারে এসে আমরা সেই আইন পাস করাতে পেরেছি।
এর মধ্যে সংশোধনীগুলো আমরা দিয়েছি সরকারের কাছে। আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো তুলে ধরেছি। তিনজন মন্ত্রী এ কমিটির মেম্বার ছিলেন, সচিব ছিলেন কয়েকজন। তারা সবাই কিন্তু আমাদের দাবির যে দিকগুলো যৌক্তিক সেগুলো গ্রহণ করেছেন। আশা করছি আগামী সংসদ অধিবেশনে বা বাজেট অধিবেশনে সংশোধনীগুলো পাস হবে।
সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ইলিয়াস কাঞ্চন একজন বিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ। উনি বলেন, এ আইন যদি সংশোধন হয় তাহলে বাংলাদেশ হেরে যাবে। কত বড় বেকুব হলে এ কথা বলতে পারে- আমি আশ্চর্য হয়ে যাই! ওই আইনের মধ্যে আছে- আপনি যদি ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করেন তাহলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা হবে। আপনি যদি যেখান-সেখান দিয়ে রাস্তা পারাপার হন, ওইটা কিন্তু ট্রাফিক রুল ভঙ্গ করা হলো। তাহলে ওই রুল যে ভঙ্গ করবে তারও ১০ হাজার টাকা জরিমানা হবে। বলেন তো- এটা কি যৌক্তিক ইয়ে হলো? আমরা সেক্ষেত্রে বলেছি- এটা হতে পারে না। আমরা সেটাকে কমিয়ে আনার জন্য বলেছি। এটাকে এক হাজার বা পাঁচশ’র মধ্যে আনতে হবে। যারা বলেন সংশোধন দরকার নাই, তারা মূলত আইনই পড়েননি।