ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মহিষজোড়া গ্রামের আমিনুল হক কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০৯ সালে বাগবিতণ্ডার জেরে আমিনুল হককে হত্যার ঘটনায় এক আসামিকে ফাঁসি এবং তার বাবাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহিম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মানিক পলাতক ছিল। তবে তার বাবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামি নূরুল করীম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামিদের বাড়ি হোসেনপুর উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের গাবুরগাও গ্রামে।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি আবু সাঈদ ইমাম আদালতের রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রদত্ত রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে আর্থিক জরিমানা এবং অনাদায়ে অতিরিক্ত এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, হত্যার শিকার আমিনুল হকের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মহিষজোড়া গ্রামে। তিনি হোসেনপুরের জিনারী গ্রামে একটি দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসাবে চাকরি সূত্রে বসবাস করতেন। গত ২০০৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর অধ্যক্ষ আমিনুল হকের ছেলে রক্সি প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার সময় ক্রিকেট খেলা নিয়ে বিরোধে জড়ায়। পরে স্থানীয় যুবক মানিক তাকে মারধর করে বাড়িতে নিয়ে বেঁধে রাখে।
খবর পেয়ে রক্সির বাবা আমিনুল হক ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ জানান। পরে মানিক ও তার বাবা নূরুল করীমের সঙ্গে আমিনুল হকের বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে মানিক ধারালো ছোরা দিয়ে আমিনুল হকের বুকে আঘাত করে। পরে গুরুতর আহত আমিনুল হককে প্রথমে জেলা সদরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও পরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর ১৭ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই ফজলুল হক বাদী হয়ে চার জনকে আসামি করে হোসেনপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তদন্ত শেষে দুই জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করে।