এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ঘোষিত ফলাফলে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য আগের দুই পাবলিক পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের গড়ের ভিত্তিতে নম্বরপত্র (ট্রান্সক্রিপ্ট) তৈরি করছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবোর্ড। শিগগিরই এই ট্রান্সক্রিপ্ট নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হাতে পাবেন অটোপাসের শিক্ষার্থীরা। একই সাথে প্রত্যেক শিক্ষার্থী আগের বছরগুলোর মতো সদনপত্রও পাবেন। সূত্র জানায়, পরীক্ষা না হলেও এবারও এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থী একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট (মার্কশিট) পাবেন। সেই সাথে তাদের সার্টিফিকেটও দেবে শিক্ষা বোর্ডগুলো। খুব শিগগিরই শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে।
শিক্ষাবোর্ডের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবার এইচএসসিতে অটোপাসের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্যই আগের দুই পাবলিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে একটি গড় করে সেই আলোকে নম্বরপত্র তৈরি করা হচ্ছে। অর্থাৎ জেএসসি ও এসএসসির বিষয়ভিত্তিক নম্বরের আলোকেই এইচএসসিতে নম্বরপত্র বা ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরি করে তা শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে। এই নম্বরপত্র নিয়েই তারা উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হতে পারবে। যদিও এবার ভর্তির জন্য ভর্তি পরীক্ষাকেই বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়।
গতকাল সোমবার কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো: আবদুস ছালাম জানান, অটোপাসকৃত ছাত্র-ছাত্রীরা আগের মতোই একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট পাবে। সেটি দিয়ে তারা যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে। অনেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। সেজন্য আমরা দ্রুত একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠিয়ে দেবো। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রথমে একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট দিবো। এর পর আমরা সার্টিফিকেটগুলো প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেবো।
অন্য দিকে যেসব শিক্ষার্থী বিভাগ পরিবর্তন করেছেন অর্থাৎ গড় নম্বরের বাইরে বিষয় ভিত্তিক বা নম্বর ম্যাপিং করেও তৈরি করা হচ্ছে ট্রান্সক্রিপ্ট। এ বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি জানিয়েছেন, নম্বর ম্যাপিং পদ্ধতিতে জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। আর সেই আলোকেই তৈরি করা হবে শিক্ষার্থীদের নম্বরপত্র।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সাধারণভাবে জেএসসি ও সমমান পরীক্ষার ২৫ শতাংশ এবং এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ৭৫ শতাংশ বিষয়ভিত্তিক নম্বর বিবেচনা করে এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হয়েছে। জেএসসি বা জেডিসি পরীক্ষার আবশ্যিক বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ের নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার আবশ্যিক বাংলা ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ের নম্বরের ৭৫ শতাংশ বিবেচনা করে এইচএসসিতে আবশ্যিক বাংলা ইংরেজি ও আইসিটি ভিশন নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞান গ্রুপের ক্ষেত্রে জেএসসি বা সমমান পরীক্ষার গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের প্রাপ্ত গড় নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও উচ্চতর গণিত বা জীববিজ্ঞান বিষয়ের ৭৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনা করে যথাক্রমে এইচএসসির পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও উচ্চতর গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের ক্ষেত্রে জেএসসি অথবা সমমান পরীক্ষার গণিত ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয় প্রাপ্ত নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসি অথবা সমমান পরীক্ষার গ্রুপভিত্তিক তিনটি সমগোত্রীয় বিষয়ে ৭৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনা করে যথাক্রমে এইচএসসির ব্যবসা শিক্ষা গ্রুপের তিনটি সমগোত্রীয় বিষয়ের ফল নির্ধারণ করা হয়েছে।
মানবিক ও অন্যান্য গ্রুপের ক্ষেত্রে জেএসসি সমমান পরীক্ষার গণিত ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে প্রাপ্ত গড় নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার গ্রুপভিত্তিক পরপর তিনটি বিষয়ের ৭৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনা করে যথাক্রমে এইচএসসি মানবিক ও অন্যান্য গ্রুপের তিনটি বিষয়ের নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
গ্রুপ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে জেএসসি বা সমমান পরীক্ষার গণিত ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয় প্রাপ্ত নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার গ্রুপভিত্তিক পরপর তিনটি বিষয়ের ৭৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনা করে যথাক্রমে এইচএসসি মানবিক ও অন্যান্য গ্রুপের তিনটি বিষয়ের নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।