নেত্রকোনার প্রধান প্রধান নদীতে নাব্য সংকট

netrokaonaনদীর জেলা হিসেবে নেত্রকোনার পরিচিতি সর্বত্র। অর্ধশতক আগেও জেলায় বাণিজ্য পণ্য পরিবহনের অন্যতম মাধ্যম ছিল নৌপথ। কিন্তু এখন আর সেই দিন নেই। জেলার অন্যতম বৃহৎ মগড়া, কংস, গুমাই, বেতাই, সোয়াইর, গোলামখালি এবং পাহাড়ি খরস্রোতা সোমেশ্বরী নদীর নাব্যতা না থাকায় নৌচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

সেই সঙ্গে নৌবাণিজ্যও বন্ধ হয়ে গেছে। নৌবাণিজ্য বন্ধ হওয়ার কারণে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে পণ্য পরিবহনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এসব নদীর বুকে এখন বোরো আবাদ হচ্ছে। নদী পানিশূন্য হয়ে পড়ায় পরিবেশেরও দারুণ ক্ষতি হচ্ছে। এক সময় নেত্রকোনার মগড়া নদী দিয়ে ৫০০ মণের ধান ও পাটের নৌকা চলাচল করত।

এ জেলা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় নৌকাযোগে যেমন পণ্য পরিবহন করা হতো, তেমনি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকেও মালামাল এখানে আসত। নেত্রকোনা শহরের মালনী রোড ছিল নৌঘাট। কিন্তু নদীতে পানি না থাকায় এখন আর সে সুযোগ নেই। নেত্রকোনার পূর্বধলার নারায়ণডহর এলাকায় পানিশূন্য মগড়া নদীতে এখন চলছে বোরোর আবাদ।

আগে দুর্গাপুরের সাদামাটি এবং সিলিকা বালু দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী ও জারিয়ার কংস নদীর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করা হতো। কিন্তু নদী পানিশূন্য হয়ে পড়ায় সব প্রকার নৌচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পণ্যসামগ্রী পরিবহনও বন্ধ। কংস নদীর বুক দিয়ে এখন ট্রাক চলাচল করে। এ কারণে নৌযানের লোকজন অনেকটা বেকার হয়ে পড়েছে। গ্রামের ব্যবসাবাণিজ্যও কমে গেছে।

আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামের নিম্ন আয়ের লোকজন। কারণ সাদামাটি ও বালু পরিবহনে সহায়তা করে দিনমজুররা অর্থ আয় করত। এখন তা বন্ধ থাকায় তাদের সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া শুধু যে নৌপরিবহন বন্ধ হয়েছে, তা নয়। নদীতে পানি কম থাকায় কৃষি কাজও ব্যাহত হচ্ছে। নদীর আশপাশে যেসব জমিতে বোরো আবাদ হয়, সেসব জমিতে পানির অভাবে সেচ কাজেরও সমস্যা হচ্ছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। নদীর যেদিকে তাকানো যায়, সেদিকেই এখন বোরো আবাদ। নদীগুলো বোরো জমিতে রূপান্তরিত হয়েছে।

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত বলেন, মগড়া, কংস এবং সোমেশ্বরী নদী খনন করতে হলে অনেক টাকার প্রয়োজন। বর্তমানে নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাতে নদী খনন কাজের জন্য কোনো টাকা বরাদ্দ নেই, তাই ঐ নদী খনন এখন সম্ভব নয়। বরাদ্দ পাওয়া গেলে নদী খনন কাজ করা হবে।

Share this post

scroll to top