মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন গত শরতে প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনকে ইরানে হামলার পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেন। এতে প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র দফতরের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। সেপ্টেম্বর মাসে বাগদাদে অবস্থিত কূটনীতিকদের বাসস্থানে মর্টার হামলার পর এই পরিকল্পনা তৈরির আদেশ করা হয়। রোববার প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এ কথা জানিয়েছে।
বাগদাদের ওই এলাকায় মার্কিন দূতাবাস রয়েছে। ওই হামলায় কেউ হতাহত হয়নি। গোলাটি খোলা স্থানে আঘাত হানে। হামলার জন্য তেহরানই দায়ী বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। এ হামলার ঘটনায় হোয়াইট হাউজ ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল (এনএসসি) পাল্টা জবাব হিসেবে ইরানে স্বল্প পরিসরে হামলা করতে চাইছে। রয়টার্স জানায়, জাতীয় নিরাপত্তা দলের অনুরোধে হামলার ছক কষেছে পেন্টাগন। এনএসসি ইরাক ও সিরিয়ায় হামলা চালানোর জন্যও আবেদন জানিয়েছে। খবরে বলা হয়, প্রতিরক্ষা দফতর সম্ভাব্য এই হামলার প্রস্তাব রাখলেও হোয়াইট হাউজকে বিষয়টি তারা অবহিত করেছে কি না তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। এমনকি এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড অবিহিত কি না তাও বলা হয়নি।
এনএসসির এক বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মিরা রিকার্ডেল ইরাকে ওই হামলাকে ‘যুদ্ধাবস্থা’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি এর জবাবে পাল্টা হামলার আহ্বান জানিয়েছেন। জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র গ্যারেট মার্কুইস জানিয়েছেন, তারা নীতি সমন্বয় করছেন এবং প্রেসিডেন্টকে বিভিন্ন হুমকির সম্ভাবনা ও তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করছেন।
তিনি বলেন, আমাদের বাগদাদ দূতাবাস ও বসরা কনসুলেটে হামলার চেষ্টার পর আমাদের লোকজনের অবস্থা খতিয়ে দেখছি এবং তাদের নিরাপত্তা ও আমাদেও স্বার্থ রক্ষায় আমরা সর্বাত্মক ব্যবস্থার কথা বিবেচনা করছি।
ট্রাম্পের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার অনেক আগে থেকেই বোল্টন ইরানে সামরিক অভিযানের কথা বলে আসছিলেন। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ইরানের ব্যাপারে আরো কঠোর পদক্ষেপ বাস্তবায়ন নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সাথে কাজ করছেন তিনি।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাগদাদের অত্যন্ত সুরক্ষিত গ্রিন জোনের ভেতরে তিনটি মর্টার গিয়ে পড়লেও তাতে কেউ হতাহত হয়নি। ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বাগদাদের ওই গ্রিন জোনের ভেতরে অবস্থিত। এখানে ইরাকের পার্লামেন্ট ভবন, সরকারি বিভিন্ন দফতর ও অনেক বিদেশী দূতাবাস আছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে ওই প্রথম গ্রিন জোনের ভেতরে মর্টার হামলা চালানো হয়। এ ঘটনার দুই দিন পর বসরায় মার্কিন কনসুলেটের কাছে রকেট হামলা হয়। তবে ওই হামলায়ও কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।