গোলরক্ষকই জিতিয়ে দিলেন ম্যাচ

স্প্যানিশ গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়ার অসাধারণ পারফরমেন্সে টটেনহ্যামকে জিততে দেয়নি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রিমিয়ার লিগের গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে স্বাগতিক টটেনহ্যামকে বারবার হতাশ করেছেন ডি গিয়া। আর এতেই ইউনাইটেডের ১-০ গোলের জয় নিশ্চিত হয়েছে। এর মাধ্যমে ওলে গানার সুলশারের অধীনে লিগে টানা পঞ্চম জয় তুলে নিয়ে রেড ডেভিলসরা।

স্পারস কোচ মরিসিও পোচেত্তিনোর বিপক্ষে এটা ছিল হোসে মরিনহোর স্থলাভিষিক্ত ইউনাইটেডের অন্তবর্তীকালীন কোচ সুলশাকারের লড়াই। এই লড়াইয়ে পোচেত্তিনো ফেবারিট থাকলেও শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছেন সুলশার।

ম্যাচের ৪৪ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন মার্কোস রাশফোর্ড। ম্যাচে পল পগবাও দারুণ খেলেছেন। কিন্তু দিন শেষে সবার স্মৃতিতে গেঁথে ছিল ডি গিয়ার অসাধারণ সব সেভ। পুরো ম্যাচে সর্বমোট ১১টি সেভ করে প্রিমিয়ার লিগে এক নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। কোন গোল হজম না করে কোন গোলরক্ষকের এতগুলো সেভ এর আগে কোন লিগ ম্যাচে হয়নি। আর এতেই হতাশ হতে হয়েছে স্পারসদের। ম্যাচ শেষে সুলশার ডি গিয়াকে বিশ্বের সেরা গোলরক্ষক বলতেও দ্বিধা করেননি। একইসাথে দলের রক্ষণাত্মক কৌশল ও টিম স্পিরিটেরও প্রশংসা করেছেন।

ইউনাইটেড কোচ বলেন, ‘এই ক্লাবে আমাদের বেশ কয়েকজন দারুণ গোলরক্ষক রয়েছে। এক নম্বরে জায়গা করে নেয়ার জন্য ডি গিয়াকে প্রতিনিয়ত এডউইন ফন ডার সার ও পিটার শিমিচেলের সাথে লড়াই করতে হয়। এখানে জয় পাওয়াটা সত্যিই অসাধারণ। ড্রেসিং রুমের উদযাপনটাও দারুণ হয়েছে।’

গত ১৯ ডিসেম্বর ইউনাইটেডের অস্থায়ী কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার সময় সুলশার ইউনাইটেডকে আর্সেনালের থেকে আট পয়েন্ট পিছনে দেখেছিলেন। কিন্তু এখন গানার্সদের সাথে সমান ৪১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে ইউনাইটেড। টেবিলের শীর্ষ চারে থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নেয়াই এখন ইউনাইটেডের মূল চ্যালেঞ্জ।

ইউনাইটেডের জয়ের দিনে এই ফলাফলটা ছিল টটেনহ্যামের জন্য সত্যিকারের হতাশার। লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা লিভারপুলের থেকে নয় পয়েন্ট পিছিয়ে স্পারসদের বর্তমান অবস্থান এখন তৃতীয়। যদিও এই পরাজয়ের পরেও পোচেত্তিনো তার দলের প্রশংসাই করেছেন।

তিনি বলেন, ‘ম্যাচে জেতার জন্য টটেনহ্যাম সব কিছুই করেছে। হয়তবা আমরাই পুরো ম্যাচে আধিপত্য দেখিয়েছি, অনেক সুযোগ তৈরি করেছি। মোট কথা, দ্বিতীয়ার্ধের খেলা নিয়ে আমি দারুণ সন্তুষ্ট। কখনো কখনো ম্যাচ জিতলেও হতাশা থেকে যায়। যেমন ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে আমরা ৩-০ গোলে জিতলেও পুরোপুরি সন্তুষ্ট ছিলাম না। ওই ম্যাচে তারা আমাদের থেকে ভাল খেলেছিল। আজ ফলাফল ভিন্ন হওয়া উচিত ছিল।’

ম্যাচের শুরুতে টটেনহ্যাম ছোট পাসে ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ করে নেয়। হ্যারি উইংকসের সুবাদে প্রথম গোলও প্রায় পেয়েই গিয়েছিল। এর আগে জেসে লিনগার্ড সফরকারীদের হয়ে প্রথম সুযোগটি নষ্ট করেন। লিনগার্ড, এন্থনি মার্টিয়াল ও রাশফোর্ডকে নিয়ে সাজানো ইউনাইটেডের আক্রমণভাগ বিরতির আগে বেশ বিপদজনক হয়ে উঠেছিল। ম্যাচের আধা ঘণ্টা পর স্পারস স্ট্রাইকার হ্যানি কেনের একটি গোল অফসাইডের কারনে বাতিল হয়ে যায়। বিরতির ঠিক আগে পেশীতে টান পড়ায় মৌসা সিসোকোর স্থানে খেলতে নামেন এরিক লামেলা। এর মিনিটখানেক পরেই ইউনাইটেড এগিয়ে যায়। লিনগার্ডের ক্রস থেকে পগবার পা ঘুড়ে রাশফোর্ড বল জালে জড়ান।

বিরতির পর টটেনহ্যাম নতুন উদ্যোমে ম্যাচে ফিরে আসার চেষ্টা করে। গোলপোস্টের খুব কাছ থেকে কেনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন ডি গিয়া। অপরদিকে এ্যাশলে ইয়ংয়ের ক্রস থেকে পগবার হেড স্পারস গোলরক্ষক হুগো লোরিসের হাতে ধরা পড়ে। স্বাগতিক সমর্থদের বাঁধভাঙ্গা সমর্থনের মধ্যে ডেলে আলির আরেকটি সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে দেন ডি গিয়া। কেনের ফ্রি-কিক থেকে টবি অল্ডারউইরেল্ডের একটি শট ডি গিয়া রুখে দিলে আরো একবার হতাশ হতে হয় স্পারসদের।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top