‘আল্লামা শফীর মৃত্যু নিয়ে বাবুনগরী মিথ্যাচার করেছেন’

হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর বড় ছেলে ইউসুফ বিন আহমদ শফী বলেছেন, বাবার মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। কিন্তু মৃত্যু স্বাভাবিক হয়েছে বলে আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জুনায়েদ বাবুনগরী মিথ্যাচার করেছেন। প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।

মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

লিখিত বক্তব্যে ইউসুফ বিন আহমদ শফী বলেন, আল্লামা শফীর মৃত্যুর তিন দিন আগে হাটহাজারি মাদ্রাসায় নারকীয় তাণ্ডব ও ধ্বংসলীলা চালানো হয়েছে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুনিয়াবাসী দেখেছে। জীবনের শেষ মুহূর্তে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। রুমের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এসি, ফ্যান, আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছিল। ফলে চিকিৎসা ব্যাঘাত ঘটে। অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলা হয়েছিল, হাসপাতালে নিতে বিলম্ব করা হয়েছিল। তার নাতীর গলায় ছুরি ধরে পদত্যাগপত্র স্বাক্ষর করাতে বাধ্য করা হয়েছিল। এসব কিছুর পরও কি বলতে হবে আহমদ শফীর মৃত্যু স্বাভাবিক হয়েছিল? মাদ্রাসায় একটি চরমপন্থি উগ্রগোষ্ঠীর অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে সহজ-সরল ছাত্রদের উস্কানি দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, হেফাজতের তথাকথিত আমির জুনায়েদ বাবুনগরী (বর্তমান আমির) গত ২৩ ডিসেম্বর হাটহাজারি মাদ্রাসায় শিক্ষকদের সামনে বসিয়ে রেখে বলেছেন, হুজুরের মৃত্যু স্বাভাবিক হয়েছে। কি চরম মিথ্যাচার। এর নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নাই।

বাবার মৃত্যুর পর তার নিজের দেওয়া বক্তব্য জোর করে নেওয়া হয়েছিল দাবি করে আহমদ শফীর ছেলে বলেন, আমার কাছ থেকে (ভিডিও বার্তার মাধ্যমে) জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেওয়া হয় ২২ সেপ্টেম্বর। কিন্তু তা প্রচার করা হয় এক সপ্তাহ পর। এতে প্রমাণিত হয় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী জঙ্গি সন্ত্রাসীদের বাঁচানোর জন্য ওই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। পরবর্তীতে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছি, আমাকে জিম্মি করে জোরপূর্বক ও ভয় ভীতি দেখিয়ে ওই পরিত্যক্ত স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে। আমি পরিষ্কার ভাষায় বলছি আমার বাবার মৃত্যু স্বাভাবিকভাবে হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আহমদ শফীর বড় ছেলে আনাছ বিন আহমদ শফী, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা সলিমুল্লাহ, মাওলানা মঈনুদ্দিন রাহী প্রমুখ।

Share this post

scroll to top