দেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণে ফায়ারিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন শেরপুরের হাসিনা আক্তার। কাছের মানুষের কাছে তিনি বীথি নামে পরিচিত। ২০ বছর বয়সী হাসিনা আক্তার আড়াই হাজার নারী-পুরুষ সৈনিকের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেছেন। ৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বিজিবির প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাফিনুল ইসলাম হাসিনা আক্তারের হাতে শ্রেষ্ঠ ফায়ারারের পদক তুলে দেন। ভিডিও সম্মেলনে ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী নারী সৈনিক হাসিনা আক্তারকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘মেয়েরা ভালো পারে সেটাই প্রমাণ হচ্ছে। নামটাও আমার নামে নাম, তাই আমারও আনন্দ হচ্ছে সেদিক থেকে।’
হাসিনা আক্তার শেরপুরের নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের হুজুরীকান্দা গ্রামের আনিসুর রহমানের মেয়ে। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। ২০১৭ সালে উপজেলার চরমধুয়া আদর্শ বিদ্যানিকেতন থেকে এসএসসি ও ২০১৯ সালে চৌধুরী ছবুরুননেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ময়মনসিংহের ৩৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নে নারী সৈনিক পদে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর ১৪ জুন থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিজিবির প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ নেন। এখন সিলেটের জকিগঞ্জে ১৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নে কর্মরত।
৭ ডিসেম্বর হুজুরীকান্দা গ্রামে কথা হয় হাসিনা আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বড় ভাই আজিজুর রহমানের অনুপ্রেরণায় বিজিবিতে যোগ দিয়েছি। ফায়ারিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় খুব ভালো লাগছে। এটা খুব কঠিন কোনো কাজ নয়। যদি মনে বিশ্বাস আর পূর্ণ মনোযোগ থাকে, তবে যেকোন নারী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে খুব সহজেই একজন সেরা ফায়ারার হতে পারবেন।’ নারী হলেও সীমান্ত রক্ষার ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে কোনো দ্বিধা নেই হাসিনা আক্তারের।
হাসিনার বাবা আনিসুর রহমান মেয়ের সাফল্যে গর্বিত। তাঁর মেয়ে শেরপুর জেলার মুখ উজ্জ্বল করেছে। এদিকে বিজিবির প্রশিক্ষণে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় হাসিনা আক্তারকে সংবর্ধনা দিয়েছে নকলা উপজেলা প্রশাসন। ১০ ডিসেম্বর নকলা সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে এ অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ মো. বোরহান উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমানসহ স্থানীয় অনেকে হাসিনা আক্তারের হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন।