অপরের শিল্পকর্মকে নিজের বলে দাবি করে মিডিয়ায় ভেসে আসা আলোচিত নাম আব্দুল কাদির। আর এই আব্দুল কাদিরের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় চিত্রশিল্পীসহ মূল উদ্যোগ গ্রহণকারী দুই যুবক। তাদের দাবি, তারা বঙ্গবন্ধুকে ভালবেসে আব্দুল কাদিরের ফসলি জমিতে দীর্ঘ দিন ধরেই এই শিল্পকর্মের যোগান ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করছিলেন। অথচ তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করে শিল্পকর্মটি নিজের তৈরি বলে দাবি করায় এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মূল চিত্রশিল্পী মাজহারুল ইসলাম ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগে ও অনুসন্ধানে জানাযায়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কুর্শিপাড়া গ্রামের নৌবাহিনীতে কর্মরত এম জহিরুল ইসলাম ছোটন গত এক বছর আগে আঠারোবাড়ি ইউনিয়নের পারাখালবালা গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদিরকে মুজিব বর্ষে ভিন্ন কিছু করে দেশবাসীকে অবাক করার পরামর্শ দেন। সেজন্য আব্দুল কাদিরকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগীতা করার অঙ্গীকারও করেন ছোটন। সেই থেকে আব্দুল কাদিরের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন ছোটন। গত ছয়মাস আগে এই স্বপ্ন পূরণের কাজে হাত দেন ছোটন। সেসময়ই ছোটন স্থানীয় আঠারবাড়ি ইউনিয়নের রায়ের বাজারের এমআর্ট এ্যাড নামীয় প্রতিষ্ঠানের চিত্র শিল্পী মাজহারুল ইসলামের শরণাপন্ন হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চিত্রকর্মের কথা শুনে চিত্রশিল্পী মাজহারুল ইসলাম বিনা পারিশ্রমিকে আব্দুল কাদিরের জমিতে বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টিনন্দন চিত্রকর্ম তৈরি করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। আর তখন থেকেই নিয়মিত আব্দুল কাদিরের জমিতে প্রতিদিন সময় দিতে শুরু করেন মাজহারুল ইসলাম। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে জমির মাটি উর্বর করা থেকে শুরু করে বীজ রোপনের পর চিত্রকর্ম ফুটিয়ে তোলা পর্যন্ত সময় দিয়েছেন মাজহারুল ইসলাম। অথচ আব্দুল কাদির বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই শিল্পকর্ম নিজে করেছেন বলে জানিয়েছেন। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আব্দুল কাদিরের জমিতে বঙ্গবন্ধুর চিত্র ফুঁটিয়ে তোলার জন্য কাজ করছেন চিত্র শিল্পী মাজহারুল ইসলাম। এসবের বিনিময়ে আব্দুল কাদিরের প্রতি মাজহারুল ইসলাম ও জহিরুল ইসলাম ছোটনের আবদার ছিলো, ভবিষ্যতে যদি কোনদিন এই বিষয়টি নিয়ে মিডিয়া বা অন্য কোথাও আলোচনা হয় তবে যেন আব্দুল কাদির তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে বক্তব্য দেন। কিন্তু অকৃতজ্ঞ কাদির গণমাধ্যমের সামনে এসে ভুলেই গেলেন মূল উদ্যোগ গ্রহণকারীদের। আর এতে করে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অকৃজ্ঞ আব্দুল কাদিরের প্রতি মানুষের বিরূপ মন্তব্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এব্যাপারে চিত্র শিল্পী মাজহারুল ইসলাম ময়মনসিংহ লাইভকে বলেন, “সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শ বাস্তবায়নের কর্মী হিসেবে আমি বিনা পারিশ্রমিকে দীর্ঘ ছয় মাস যাবত চিত্রকর্মটির পেছনে শ্রম দিয়ে বিজয়ের মাসে দেশবাসীর মাঝে চিত্রকর্মের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরেছি। অথচ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই শিল্পকর্ম নিয়ে আব্দুল কাদির অবশেষে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে যা কল্পনাতীত। এই আব্দুল কাদির বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমার এই কষ্টের প্রতি সামান্য কৃতজ্ঘতাও স্বীকার না করায় আমি ব্যতিত হয়েছি। আমি আমার এই স্বত্ত্ব ফিরেয়ে পেতে চাই।”
এব্যাপারে নৌবাহিনীতে কর্মরত এম জহিরুল ইসলাম ছোটন ময়মনসিংহ লাইভকে বলেন, সত্য কথা বলতে আব্দুল কাদির অকৃতজ্ঞ। মূল চিত্রশিল্পী ও উদ্যোগ গ্রহণকারীদের নাম না প্রকাশ করে নিজের কৃতিত্ব প্রকাশ করে সে মানুষের কষ্টকে মূল্যায়ন দিতে পারলো না। সে কি আরেকটা নতুন কোন চিত্রকর্ম এভাবে ফুঁটিয়ে তুলতে পারবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।
এব্যাপারে আঠারোবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জুবের আলম কবীর রূপকের বক্তব্য নিতে যোগাযোগ করা হলে মোবাইলে বন্ধ পাওয়া যায়।