এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলায় ‌‘ফেসবুক প্রেমিকের’ যাবজ্জীবন

বরিশালে ২০১৬ সালে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলার আসামি সায়েম আলম মিমুকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। একই সাথে চুরির দায়ে মিমুকে আরও ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। রায়ে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় একটি আবাসিক হোটেলের ম্যানেজারকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ আজ রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার।

ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফয়জুল হক ফয়েজ জানান, ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বরিশাল নগরীর চকবাজারের আবাসিক হোটেল ফেয়ার স্টারের ৩০৯ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেয় ঢাকার ওয়ারীর ৬০/১ যুগীনগর এলাকার মো. সেলিম আলমের ছেলে সায়েম আলম মিমু এবং তার ফেসবুক প্রেমিকা নাঈমা ইবাহিম ইশি। পরে ওই কক্ষে ইশিকে ধর্ষণ করেন মিমু। ধর্ষণের ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে হোটেল কক্ষের সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মাহত্যা করে ইশি। তখন তার মুঠোফোন ও স্বণালংকার নিয়ে সায়েম আলম পালিয়ে যান। পুলিশ ওইদিনই হোটেল কক্ষ থেকে ইশির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় ইশির বাবা ইব্রাহিম খলিল বাদী হয়ে ওই দিনই কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলার সূত্র ধরে হোটেলের মালিক আব্দুল বিশ্বাস ও ম্যানেজার মজিবুর রহমান আকনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ইশির ফেসবুক প্রেমিক সায়েম আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

২০১৭ সালের ৩১ মার্চ হোটেল মালিক আব্দুল বিশ্বাসকে অব্যাহতি দিয়ে প্রধান অভিযুক্ত প্রেমিক সায়েম আলম ও হোটেল ম্যানেজার মজিবুর রহমান আকনের বিরুদ্ধে আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

ট্রাইব্যুনালে ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ইশিকে ধর্ষণের দায়ে আজ আসামি সায়েম আলমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে ১০ বছর কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং চুরির কারণে ৫ বছর কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানার রায় ঘোষণা করেন বিচারক। একই সাথে ওই ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় হোটেল ম্যানেজার মজিবুর রহমানকে বেকসুর খালাস দেন ট্রাইব্যুনাল।

রায় ঘোষণার পরপরই আসামিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ইশির বাবা ইব্রাহিম খলিল। এর মাধ্যমে এ ধরনের অপরাধপ্রবণতা কমবে, আশা তাদের।

Share this post

scroll to top