বিদেশ ঘোরার স্বপ্ন থাকলে ঠিক কত টাকা রোজগার করতে হয়? সিঙ্গাপুর, আর্জেন্টিনা, পেরু, সুইৎজারল্যান্ড… শুধুমাত্র চা বিক্রি করে কি এ সব জায়গায় ঘুরে আসা সম্ভব? হ্যাঁ সম্ভব। আর সেটাই করে দেখালেন এক দম্পতি।
কোচিতে একটি ছোট চায়ের দোকান এই দম্পতির। ৫০ বছর ধরে এই দোকানেই চা বিক্রি করে আসছেন। আর সেই চা বিক্রির টাকাতেই ২৩টা দেশ ঘুরে ফেলেছেন তাঁরা।
কেরলের কোচির বাসিন্দা ৭০ বছরের বিজয়ন এবং তার ৬৮ বছরের স্ত্রী মোহনা। ১৯৬৩ সাল থেকে চা বিক্রি করছেন বিজয়ন। প্রথমে ভারতের কোচির রাস্তায় রাস্তায় চা বিক্রি করতেন তিনি। পরে কোচিতে চায়ের দোকান খোলেন। ছোটবেলা থেকেই দু’জনের ইচ্ছা ছিল দেশ ভ্রমণের। ছোট সেই দোকানই তাঁদের স্বপ্নের উড়ানে সাহায্য করে।
বিজয়ন জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে সুইৎজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, পেরু, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, আমেরিকা–সহ ২৩টা দেশ ঘোরা হয়ে গিয়েছে তাদের। এ বার তাদের তালিকায় রয়েছে সুইডেন, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, গ্রিনল্যান্ড, নরওয়ে। কিন্তু কী ভাবে বিদেশযাত্রার এই বিশাল খরচ জোগান তারা?
বিজয়ন জানান, তাদের দোকানে রোজ ৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাহক আসেন। তারা দু’জনে মিলে দৈনিক ৩০০ টাকা করে জমিয়ে রাখেন শুধুমাত্র বেড়ানোর খাতে। এতে বছরে ১ লক্ষ টাকার মতো জমে। কয়েকটা বছর এ ভাবে টাকা জমান। বাকিটা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে নেন। পরে ৩ বছর ধরে সেই ঋণ শোধ করেন। ঋণ শোধ হওয়ার পর ফের শুরু করেন পরবর্তী বিদেশ ভ্রমণের তোড়জোড়। এভাবেই ২৩টি দেশ ঘুরে ফেলেছেন তারা।
দৈনন্দিন খরচ কমানোর জন্য দোকান এবং বাড়ির সমস্ত কাজ তারা নিজেরাই করে থাকেন। তাদের দোকানে একজনও কর্মচারী নেই। বাড়িতেও নেই কোনও পরিচারিকা।
কোচির ওই দম্পতি এখন সেলিব্রিটি। তাদের দোকান এক ডাকে চেনেন সকলে। বিদেশ সফর থেকে কী শিখলেন? বিজয়ন বলেন, ‘‘ঘুরলে আপনার মন পাল্টে যায়, সংস্কৃতিরও বদল ঘটে।’’
আর পাঁচজন দম্পতির মতো বিজয়ন ও মোহনারও দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে অনেক মতবিরোধ হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে একটাই মিল। দু’জনেই দেশ-বিদেশ ঘোরার স্বপ্ন নিয়ে বাঁচেন। সেই স্বপ্নের জোরেই এখন তাদের কাহিনি সোশ্যাল মিডিয়া সেনসেশন।