মামুনুল হক গংরা ময়মনসিংহের মাটিতে পা রাখলে রক্তের গঙ্গা বয়ে যাবে- সমাবেশে বক্তারা

mymensingh Aligueময়মনসিংহের মাটিতে মামুনুলহকসহ তার অনুসারীদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি না দেয়ার জন্য জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ কুদ্দুছ আহবান জানিয়ে বলেন, মামুনুল হক গংরা ময়মনসিংহের মাটিতে পা রাখলে রক্তের গঙ্গা বয়ে যাবে।

শনিবার সকালে ময়মনসিংহ শহরের গাঙ্গিনাপাড়স্থ ফিরোজ জাহাঙ্গির চত্তরে ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের বেশ কিছু সাবেক ছাত্রনেতার উদ্যোগে আয়োজিত,ভাস্কর্য বিরোধিদের প্রতিহতের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ’৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সাবেক ছাত্র নেতা এড. মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, “ভাস্কর্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলোতেই আছে,সুতারাং এসব অহেতুক বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক কোন ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করবেন না,আমরা বলে দিতে চাই ধর্ম ব্যবসায়ী জুনায়েদ বাবুনগরী ও মামুনুল হককে ময়মনসিংহের মাটিতে পা রাখতে দেওয়া হবে না”। মামুনুল হক নামে মুসলমান, কামে মুসলমান না। মামুনুল হককে শয়তান উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘‘আমি তোমাকে ইসলাম ধর্ম থেকে খারিজ করে দিলাম।”

জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি এডভোকেট সাদেক খান মিল্কী টজু বলেন, মামুনুল হক গংরা ভন্ড, ওরা ধর্ম ব্যবসায়ী, তাদের কাছে কোনটা মূর্তি বা ভাস্কর্য তার ব্যাখ্যা আমরা দিতে রাজি নই। ময়মনসিংহ শহরে ওয়াজের নামে যেসব বক্তব্য দেয়া হয় তাদের নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন তিনি। তাদেরকে যেখানেই পাবেন সেখানেই ওয়াট আটকে দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠান বলেন, সম্প্রতি হেফাজতের নতুন কমিটি হওয়ার পর সাম্প্রদায়িক শক্তি মূর্তি-ভাস্কর্য মাতামাতি করছে। মাদ্রসা-মসজিদকে কোনমতেই মামুনুল হক ক্যাডারদের আকড়ায় পরিণত হতে দেয়া যাবেনা। আগে থেকেই মামুনুল হকদের বিরুদ্ধে জেগে ওটলে কোনমতেই মামুনুল হক ময়মনসিংহ আসতে পারতনা। ভবিষ্যতেও আসার চিন্তা করতো না।

জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি ময়মনসিংহের সভাপতি এড. এমদাদুল হক মিল্লাত বলেন, সরকারকে ফাঁদে ফেলতে উগ্রবাদীরা নানা রকম কৌশল নিচ্ছে। ভাস্কর্য নিয়ে এত হইচইয়ের কিছু নেই। সারা বিশ্বেই ভাস্কর্য আছে।

আইনজীবী নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, জামায়াত বিএনপি বরাবরই সরকারকে বেকায়দায় রাখার চেষ্টায় লিপ্ত থাকে। এসব উগ্রবাদীদের প্রতিহত এখন সময়ের দাবি। তিনি আরো বলেন, ভাস্কর্য  নিয়ে ব্যাখ্যা দিবেন না। তারা প্রতিহত করতে চান। তিনি মামুনুল হকের বাবাকে কুখ্যাত রাজাকার উল্লেখ করে আরো বলেন, বাংলাদেশ থেকে এসব অপমক্তিকে বিতাড়িত করতে হবে।

মানববন্ধনে অন্যান্য বক্তারা বলেন, ভাস্কর্যের বিষয়ে কে ফতোয়া দিলো বা না দিলো এসব আমরা দেখবো না। এই মোল্লারাই একদিন টিভি সিনেমা বন্ধের ফতোয়া দিয়েছিলো, ফতোয়া দিয়েছিলো ছবি তুলার বিষয়ে আজ তাদেরকেই ছবি তুলার জন্য সবচেয়ে বেশি দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যায়। এই মোল্লারা রাষ্ট্রে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য গভীর ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তারা আরো বলেন,আপনারা সাবধান হোন,যারাই ওয়াজ মাহফিলের নামে রাজনৈতিক বক্তব্য দিবে,বা সরকারবিরোধী কোন কথা বলবে, সেখানেই তাদেরকে কঠিন প্রতিবাদ করবেন। এর আগে সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া মানববন্ধনে,ভাস্কর্য বিরোধিদের বিরুদ্ধে জাগরণী সঙ্গীত,মৌন সঙ্গীত ও কবিতা আবৃতি পাঠ করা হয়।

মানববন্ধনে আইনজীবী নজরুল ইসলাম চুন্নুর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি এডভোকেট সাদেক খান মিল্কী টজু, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠান, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ কুদ্দুছ, বাসদ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. হাফিজুর রহমান খোকন, জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য সম্পাদক আবু সাঈদ দ্বীন ইসলাম, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি ময়মনসিংহের সভাপতি এড. এমদাদুল হক মিল্লাত, জেকেপি কলেজের অধ্যক্ষ সুলতানা পারভীন, মহিলা শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা রোকেয়া আক্তার শিখা, ময়মনসিংহ মহিলা আওয়ামীলীগের সহ- সভাপতি অধ্যাপিকা দিলরুবা পারভীনসহ প্রমুখ।

Share this post

scroll to top