প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বই লিখলো ময়মনসিংহের জিয়ারুল

Ziarul১৯৯৬ সালের নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার পর ময়মনসিংহের সার্কিট হাউজ মাঠে এসে ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সময় প্রধানমন্ত্রীকে নিজ চোখে এক নজর দেখতে ছুটে গিয়ে ছিলেন টকবকে যুবক জিয়ারুল ইসলাম ফকির। তখন প্রিয় নেত্রীর ভাষণ শুনে জিয়ারুলের মনে আত্মতৃপ্তি জন্ম নেয় ও বঙ্গবন্ধুকে মনে প্রাণে ভালবেসে ফেলে। ওই সময় থেকেই বঙ্গবন্ধু ও প্রিয় নেত্রীর প্রতি ভালবাসা বুকে ধারণ করে নিজ হাতে একটি বই লিখা শুরু করেন তিনি। বইটির নাম দেয়া হয়, পিতার কথা রাখতে গিয়ে সন্তানের জীবন ঝুঁকি। বইটি লেখার পর সেটি প্রকাশিতও হয়েছে। সেই বই প্রধানমন্ত্রীর হাতে পৌছে দিতে অনেকের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছেন জিয়ারুল। কিন্তু কেউ তার কথায় সারা দেয়নি। ভেবেছেন জিয়ারুল গাগলের পলাপ বকছে। আবার অনেকেই তাকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেয়ার কথা দিয়েও কথা রাখেনি। শুধু দিয়েছেন মিথ্যে আশ্বাস।

কথায় আছে না পাগলে বলে কি? আর ছাগলে খাই কি? এমন উপহাস পেয়েছেন সবার কাছ থেকে। এরপরেও হাল ছাড়েনি জিয়ারুল। অবশেষে নিজের লেখা বইটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে পৌছে দিতে বঙ্গবভন পর্যন্তও গিয়ে ছিল। সেখান থেকেও মিথ্যে আশ্বাস আর অবহেলা পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর হাতে বইটি পৌছানোর জন্য বেশ কয়েক বার ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়েও গিয়েছে। কিন্ত ভাগ্য তাকে সেখানেও নিরাশ করেছেন। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি দায়িত্বে থাকা পিয়ন। তবে প্রধানমন্ত্রীর হাতে বইটি পৌছে দিতে এখনো হাল ছাড়েনি জিয়ারুল। প্রতিদিন ছুটে চলেন আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের ধারে ধারে। যদি কখনো প্রিয় নেত্রীর হাতে নিজের লেখা বইটি তুলে দিতে পারেন। এমন বিশ্বাস বুকে নিয়েই এসে ছিলেন এই প্রতিবেদকের কাছে। কথা হয় বিভিন্ন জানা অজানা বিষয় নিয়ে।

জানা যায়, লেখকের নাম জিয়ারুল ইসলাম ফকির। সে সদর উপজেলার ১১ নং ঘাগড়া ইউনিয়নের চর ঘাগড়া গ্রামের সমিতি বাজার এলাকার বাসিন্দা মোঃ আব্দুল মালেক মন্ডলের পুত্র। তিনি পেশায় একজন সাধারন শ্রমিক। তবে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্তা নেই তার। কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মায়ের সম্মানে ভালবাসেন তিনি।

এ বিষয়ে জিয়ারুল ইসলাম ফকির প্রতিবেদককে জানান, ছোট থেকেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভক্তি রয়েছে। টিভি ও রেডিওতে উনার ভাষন শুনতাম। তখন থেকেই নিজের বিতর দেশ প্রেম জন্ম হয়। আমি একজন সাধারন মানুষ। রাজনীতি বুজিনা। তবে বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষণ শুনে শরীরের রক্ত গরম হয়ে যেত। জন্ম নেয় তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।

তিনি আরও জানান, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নির্বাচিত হওয়ার পর ময়মনসিংহের সার্কিট হাউজ ময়দানে এসে ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। সেই সময় প্রধানমন্ত্রীকে নিজ চোখে দেখতে ছুটে আসছিলাম সার্কিট হাউজ মাঠে।। তখন আমার নেত্রীর ভাষণ শুনে মনে আত্মতৃপ্তি জন্ম নেয় ও বঙ্গবন্ধুকে মনে প্রাণে ভালবেসে ফেলি। হঠাৎ একদিন ঘুমের মাঝে আমি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে স্বপ্নে দেখি তিনি আমার বাড়িতে এসে চেয়ারে বসেছেন। তখন মা হাসিনসকে কদমে ধরে কদম মুছি করি। পরে এই স্বপ্নের কথা আমি আমার গুরুর কাছে বলি। তখন তিনি আমাকে বলেন, রাজা বাদশাকে স্বপ্নে দেখা ভাল। আমি মাঝে মাঝে আল্লাহ তা’লার কাছে বলি, আমার স্বপ্ন যেন সত্যি হয়। আমি আশা রাখি একদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার বাড়িতে আসবেন ইনশাল্লাহ।

তিনি আরও জানান, এই স্বপ্ন দেখে আমার বিবেকের কাছে প্রশ্ন জাগে? জাতির পিতা শেখ মজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার জন্য কিছু করতে চাই। আমার সামনে যদি কেউ রাষ্ট্র নিয়ে কথা ভাল বলো কথা বলে, তখন আমার মনে হয় জাতির পিতা শেখ মজিবুর রহমান ও মা শেখ হাসিনার মাঝে নিঃস্বার্থ দেখতে পায়। ওই সময় থেকেই বঙ্গবন্ধু ও প্রিয় নেত্রীর প্রতি আমার অঘাত ভালবাসা বুকে ধারণ করে একটি বই লিখা শুরু করি।

বইটির নাম দেয়া হয়, পিতার কথা রাখতে গিয়ে সন্তানের জীবন ঝুঁকি। এটি লিখতে সময় লেগেছে প্রায় ৭ বছর। পরে বইটি প্রকশিত হওয়ার পর থেকে প্রধানমন্ত্রীর হাতে পৌছে দিতে অনেকের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছি। কিন্তু কেউ আমার কথায় সারা দেয়নি। ভেবেছে আমি গাগলের পলাপ বকছি। আবার অনেকেই আমাকে কথা দিয়েও কথা রাখেনি। শুধু দিয়েছেন মিথ্যে আশ্বাস। তবে আমি এখনো হাল ছাড়িনি। আমার বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর হাতে এই বই আমি পৌছে দিয়ে পরে মরবো ইনশাল্লাহ। জাতির পিতা শেখ মজিবুর রহমানের ৭ ই মার্চের ভাষণের কিছু কথা তুলে ধরে এই বইতে শেখ হাসিনার জীবনের অনেক বাস্তব কথা লেখা আছে, পাঠক পড়লে বিস্তারিত বুজতে পাবেন আশা করছি।

Share this post

scroll to top