বাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ফুটবলের বরপূত্র দিয়েগো ম্যারাডোনা। তার মৃত্যুতে শুধু ফুটবল নয়, বিশ্বজুড়ে সব ক্রীড়াঙ্গনেই পড়েছে শোকের ছায়া।
আর তা তো হওয়ারই কথা। কেননা, ইতিহাস রাঙানো অসংখ্য অর্জন, কীর্তি। প্রতিভা, উন্মাদনা,মাদকসহ নানা বিতর্ক, দ্রোহ, রোমাঞ্চ আর আবেগ সব মিলিয়ে দিয়েগো ম্যারাডোনা একজনই। এসব ছাপিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন জীবনের চেয়েও বড় এক চরিত্র। গোটা দুনিয়াকে ফুটবলের উথাল প্রেমে মাতানো তারকা ম্যারাডোনা। সেই মানুষ সবাইকে কাঁদিয়ে আচমকা চলে গেলেন।
ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে বিশ্বব্যাপী চলছে স্মৃতিচারণ। ব্যতিক্রম নন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক পিটার শিল্টন।
এই শিল্টন হলেন সেই গোলরক্ষক যার বিরুদ্ধে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে হাত দিয়ে গোল করেছিলেন ম্যারাডোনা। যা পরবর্তীতে শৈল্পিক রূপ নাম নিয়ে ‘হ্যান্ড অব গড’ হিসেবে পরিচিতি পায়। বিষয়টিতে যারপরনাই বিরক্ত ছিলেন শিল্টন।
আর এ কারণে মহাতারকার মৃত্যুর পরও ক্ষোভ সামলাতে পারলেন না তিনি।
শিল্টন বলেন, “ম্যারাডোনার মৃত্যুতে আমি ব্যথিত। তাকে সেরা খেলোয়াড় হিসেবেও মেনে নিয়েছি। কিন্তু তার সেই ঘটনার (হাত দিয়ে গোল) জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল।”
শিল্টন বলেন, “ঘটনাটি নিয়ে আমি কয়েক বছর বেশ বিরক্ত ছিলাম। আমি এখনও মিথ্যা বলব না। মানুষ বলে আমি বলটি ক্লিয়ার করতে পারতাম। কিন্তু আমি আমার চেয়ে অনেক খাটো একজন মানুষকে সুযোগ দিয়েছি আমার ওপর দিয়ে লাফ দিয়ে গোল করার জন্য। পুরোটাই বাজে কথা। ম্যারাডোনা আমাকে পরাস্ত করার মতো গতিতে ছিল। যদি সে মাথা দিয়েই হেড দিতে পারতো তাহলে সে হয়তো হাত দিয়ে গোল করতো না। করতো কি? অবশ্যই করতো না। বিষয়টি নিয়ে আমার কোনও আপত্তি নেই।”
“তবে আমার আপত্তি হল ওই ঘটনা নিয়ে সে কখনও ক্ষমা চায়নি। সে তার জীদ্দশায় কখনও বলেনি যে আমাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা করেছিল। কখনও বিষয়টি নিয়ে ব্যথিতও হয়নি। উপরন্তু বিষয়টিকে সে ‘হ্যান্ড অব গড’ আখ্যা দিয়েছি। এটা ঠিক ছিল না। এটা সত্য ম্যারাডোনা একজন বড় মাপের খেলোয়াড় ছিল, কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হল তার কোনও স্পোর্টসম্যানশিপ ছিল না।”
ওই ঘটনার পর অনেকবার অনেকে চেষ্টা করেছিলেন শিল্টন ও ম্যারাডোনাকে একত্রিত করার। কিন্তু শিল্টন কখনওই সে পথে হাঁটেননি। বিভিন্ন শো, টক-শোসহ টেলিভিশন অনুষ্ঠানে একসঙ্গে আমন্ত্রণ পেলেও তিনি যাননি। ১৯৮৬ সালের পর থেকেই ম্যারাডোনাকে এড়িয়ে গেছেন শিল্টন। তথ্যসূত্র: গিভমিস্পোর্ট, স্কাইস্পোর্টস, ফুটবল৩৬৫