প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন পাওয়ার লড়াইয়ে বড়সড় ধাক্কা খেল অক্সফোর্ড। যে ভ্যাকসিনের দিকে গোটা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ তাকিয়ে ছিলেন সেই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল নতুন করে শুরু হতে পারে। এমনটাই ইঙ্গিত দিলেন সংস্থাটির সিইও।
অ্যাস্ট্রোজেনেকার পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়েছিল, তাদের টিকা তৈরি এবং ট্রায়ালের পদ্ধতিতে ভুল হয়েছিল। এর জেরে ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা নিয়ে তারা যতটা আশাবাদী ছিলেন, এটি অনেকক্ষেত্রে ততটা কার্যকরী হয়নি।
সম্প্রতি টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলাকালীন তা অত্যন্ত কার্যকরী বলে দাবি করেছিলেন আবিষ্কর্তারা। কিন্তু জনা কয়েক স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় তাদের দাবি প্রশ্নের মুখে পড়ে।
দেখা গেছে, ট্রায়ালে যাদের শরীরে কম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ কার্যকর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন। আর যারা পুরোমাত্রায় ডোজ নিয়েছেন, তাদের শরীরে অনেকটাই কম ৬০ থেকে ৬২ শতাংশ কাজ করছে ওই ভ্যাকসিন। এখানেই প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকে। কেন এই হেরফের? এই ভ্যাকসিনের নিয়ম অনুযায়ী, রোগ প্রতিরোধের জন্য দুটি ডোজই কার্যকরী। তাহলে পুরোমাত্রায় ডোজ নেওয়া স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে এতটা কম কাজ করল কেন?
প্রশ্নের মুখে পড়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকার সিইও পাস্কাল সরিয়েট নতুন করে এই টিকার ট্রায়ালের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলছেন, “যেহেতু আমাদের গবেষণায় ত্রুটি দেখা দিয়েছে, তাই আমাদের ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা প্রমাণ করতে হবে। আর সেজন্য সম্ভবত আমরা অতিরিক্ত একটি ট্রায়ালের পথে হাঁটব। এটা সম্ভবত আরও একটা আন্তর্জাতিক ট্রায়াল হতে চলেছে। তবে, এবারের ট্রায়ালে অতটা সময় লাগবে না, আর ট্রায়াল হবে কম সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে। কারণ, আমরা জেনে গিয়েছি কীভাবে ডোজ দিলে টিকাটি কার্যকর হচ্ছে।”
সরিয়েটের আশা ইউরোপ বা ব্রিটেনে এই নতুন ট্রায়ালের অনুমতি পেতে সমস্যা হবে না। তবে, আমেরিকায় তা সময়সাপেক্ষ হতে পারে। অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিনের নতুন করে ট্রায়াল শুরুর অর্থ হল, ভারতের অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হতে চলেছে। কারণ, ভারত সরকার যে ক’টি সংস্থার ওপর বাজি ধরেছে, তাদের মধ্যে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের প্রস্তুতকারক সেরাম ইনস্টিটিউটই সবচেয়ে এগিয়ে ছিল। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, সিএনএন, বিবিসি