সাধারণ মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পারেননি হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী ওরফে কুয়াকাটা হুজুর। সরকারি কোন অনুমতি না থাকলেও ময়মনসিংহে ২৭নভেম্বর শুক্রবার হাফিজুর রহমান সিদ্দিকীর কয়েকটি বার্ষিক মাহফিল রয়েছে। তার আগমনকে কেন্দ্র করে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ময়মনসিংহের সর্বস্তরে সমালোচনা তুঙ্গে। বিশেষ করে তরুণ ও আলেম সমাজের মধ্যে ক্ষোভের বহি:প্রকাশ লক্ষ্য করা গেছে। তার আগমনকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
জানাযায়, ময়মনসিংহের সদরের খাগডহর ইউনিয়নে অবস্থিত জামিয়া আশরাফিয়া মাদ্রাসা, ত্রিশালের নজরুল একাডেমি ময়দান ও ভালুকার মল্লিক বাড়িতে ২৭নভেম্বর শুক্রবার বার্ষিক মাহফিলে মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকীর আসার কথা রয়েছে। এ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট আয়োজকরা আয়োজনের চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকলেও সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও উত্তেজনায় কাঙ্খিত জনসমাগম ভেস্তে যাওয়ার পথে।
অনুসন্ধান ও জরিপে দেখা যায়, ময়মনসিংহ অঞ্চলের জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ময়মনসিংহ লাইভের ফেসবুক পেইজে উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন প্রোগ্রামের পাশাপাশি ইসলামী সম্মেলনের বক্তাদের বক্তব্য গুলো লাইভ করে থাকে।
তারই ভিত্তিতে ২৬নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়মনসিংহ লাইভের ফেসবুক পেইজে মতামত চাওয়া হয় যে, “মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকীর বক্তব্য লাইভ করা হবে কিনা”। এমন শিরোনামে একটি পোস্ট করলে মূহুর্তেই কমেন্ট বক্সে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে ময়মনসিংহের তরুণ ছাত্র সমাজ এবং সাধারণ জনগণ।
তাদের দাবি কোনভাবেই যেনো তার বক্তব্য লাইভ না করা হয় এবং সে যেনো ময়মনসিংহে আসতে না পারে।
কমেন্টে তাদের বক্তব্যগুলো যেমন ছিলো,ঠিক সেইভাবেই তুলে ধরা হলো:
➤ফয়েজ হাবিব লিখেছেন “না না একদম না এলোকের বয়ান আমরা শুনবো না অন্তত, যারা আমার প্রিয় মানুষকে নিয়ে কুৎসা রটায় আমি ওদের মন থেকে নামিয়ে রেখেছি”
➤আজিজুল হক হেলাল লিখেছেন “ওরে ময়মনসিংহে আনাই ঠিক হচ্ছে না”
➤লিটন লিখেছেন “হাফিজুর রহমান সিদ্দিকীকে এরদোয়ানের কাছে পাঠানো হক, সেখানে কিছু থেরাপি পাওয়া যায়, সেটা এরদোয়ান নিজেই তাকে দিবেন। আমি আশা করি এরপর সে কোনদিন কারো বিরুদ্ধে আজেবাজে কথা বলবে না”
➤ফরহাদ হোসেন মিয়া লিখেছেন “হাফিজুর রহমান একজন অহংকারী, সে মিজানুর রহমান আজহারীর বিরুদ্ধে লেগেছিলো, এখন মামুনুল হক সাহেবের বিরুদ্ধে লেগেছে”
➤নাজমুল হাসান লিখেছেন “সে একজন সমালোচক এবং বিতর্কিত আপনারা তার বয়ান লাইভ করলে তলানিতে(তলিয়ে)যাবেন”
➤ফয়সাল আহমদ লিখেছেন “উনিতো ঐলোক যিনি মামুনুল হক সাহেবের মতো একজন আলেমকে মামুইন্যা বলে ডাকে,আমরা তার ওয়াজ লাইভ চাইনা”
➤শাহজাহান সাজু মিয়া লিখেছেন “কোন দরকার নাই এটা একটা বাটপার ”
➤আরিফ রাব্বানি লিখেছেন “সে একজন উলামা লীগের লোক,তার থেকে দূরত্ব বজায় রাখাই ভালো”
➤আব্দুল্লাহ্ আল এনাম লিখেছেন “না করাই ভালো উনার কার্যকলাপ আপত্তিকর ”
ইত্যাদি অসংখ্য কমেন্টসে কমেন্ট বক্স ভারী হতে থাকে।
আবার তাকে দুয়েকজন সমর্থন দিতেও দেখা গেছে।
এব্যাপারে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো: শাহজাহান মিয়া ময়মনসিংহ লাইভকে বলেন, “এসব মাহফিল করতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরণের অনুমতি দেয়া হয়নাই।”
উল্লেখ্য,গত কিছুদিন আগে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে একটি বৈঠকে মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী ব্যাঙ্গাত্বক মূলক বিভিন্ন শব্দ উচ্চারণ করে,পরে সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের রোষানলে পড়েন তিনি, এরপর ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হতে তাকে তাকে ঘিরে। বিষয়টি হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিবের গোচরে এলে তিনি মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকীর শায়েখ(মুরুব্বি) বসুন্ধরা ইসলামী রিসার্চ সেন্টারের মাওলানা মিজানুর সাইদকে অবগত করেন, ফলে এর কয়েকদিন পর মাওলানা মামুনুল হক, হাফিজুর রহমান সিদ্দিকীসহ দেশের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় আলেমদের সম্মুখে বিষয়টি সুরাহা করেদেন মাওলানা মিজানুর রহমান সাইদ। পরে মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী মাওলানা মামুনুল হকের কাছে অনুতপ্ত হোন। কিন্তু এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারো মাওলানা মামুনুল হকের ফ্যামিলির বিরুদ্ধে মাওলানা সিদ্দিকী ও মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাইফী, কিছু ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেন, যেগুলোর কোন প্রমাণ বা দলিল তাদের কাছে নেই। আর ঠিক এমন এক মূহুর্তেই ময়মনসিংহের সদরের খাগডহরের জামিয়া আশরাফিয়া, ত্রিশালের নজরুল একাডেমি ময়দান ও ভালুকার মল্লিক বাড়িতে তাকে বয়ানের জন্য আমন্ত্রণ করা হয়, এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্র ক্ষোভ প্রকাশ করছে সাধারণ মানুষ।