সুনামগঞ্জে নারী নির্যাতনের ৪৭টি মামলায় কাউকে কারাগারে না পাঠিয়ে বাদী-বিবাদীকে (স্বামী-স্ত্রী) একত্রে বসবাস করার শর্তে মামলা নিষ্পত্তি করেছেন আদালত।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একসাথে ৪৭টি পৃথক মামলায় সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো: জাকির হোসেন এ আদেশ দেন।
৪৭টি মামলার বাদী-বিবাদীর আপসের অঙ্গীকারনামা পেয়ে আদালত ৯৪ জন বাদী-বিবাদীকে (স্বামী-স্ত্রী) একত্রে মিলেমিশে সংসার করার আদেশ দেন। রায় ঘোষণার পর আদালতের পক্ষ থেকে ৪৭ দম্পতিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
অঙ্গীকারনামায় ৪৭ দম্পতি বলেন, সন্তানাদি নিয়ে পরিবারের অন্যদের সাথে সদ্ভাব বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে সংসারধর্ম পালন করবেন তারা। সংসারে শান্তি বিনষ্ট হয় এমন কোনো কাজ করবেন না। স্বামী-স্ত্রী উভয়কে যথাযোগ্য মর্যাদা দেবেন। স্বামী-স্ত্রী বা তার মা-বাবা ও অভিভাবকের কাছে যৌতুক দাবি করবেন না। পারিবারিক বিষয় নিয়ে মনোমানিল্য ও বিরোধ দেখা দিলে নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করবেন। স্বামী কখনো স্ত্রীকে নির্যাতন করবেন না। স্ত্রীকে নির্যাতন করলে বা যৌতুক দাবি করলে স্ত্রী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট নান্টু রায় বলেন, আদালত পৃথক ৪৭টি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় একসাথে যুগান্তকারী একটি রায় দিয়েছেন। সব মামলার বাদী-বিবাদীকে আপসে মিলিয়ে দেয়া হয়েছে। আদালত বলেছেন, স্বামী-স্ত্রীকে মিলেমিশে পরিবারের সাথে একত্রে বসবাস করতে হবে। ভবিষ্যতে তারা ঝগড়া-বিবাদ না করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করবে। রায় ঘোষণার ফলে স্বামী ফিরে পাবে স্ত্রী, শিশুরা ফিরে পাবে বাবা-মা। আদালত শুধু সাজাই দেয় না, ভালোবাসার মাধ্যমে সংসার ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব সেটাই প্রমাণ করলেন।