চারিদিকে ষড়যন্ত্রের আভাস,মিথ্যা অপপ্রচার এবং ষড়যন্ত্রকারীদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে জাতির উদ্দেশ্য ভাষণ দিয়েছে খেলাফত মজলিস বাংলাদেশের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।
আজ(২৪নভেম্বর) দুপুর ১২টায়,মাওলানা মামুনুল হকের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ থেকে জাতির উদ্দেশ্যে এই ভাষণদান করেন।
এর আগে সকাল ১০টায়,পেইজে তিনি ভাষণদানের প্রচারমুলক পোস্ট করেন,যেভাবে লিখেছেন সেভাবে তুলে ধরা হলো.”চারিদিকে ষড়যন্ত্রের আভাস । মিথ্যা অপপ্রচারে কান ঝালাপালা হওয়ার দশা । ভেতরে-বাইরে মীরজাফর-লর্ডক্লাইভদের আনাগোনা । কী ঘটছে আমাকে নিয়ে ? কী চায় ষড়যন্ত্রকারীরা ? কোন পথে হাটছে সরকার? আমাদের ভবিষ্যতচিন্তাই বা কী ? অনেক কথা !! অনেক দিন হল শুধু শুনছি আর দেখছি, কিছু বলছি না । আজ কিছু কথা বলব লাইভে ইনশাআল্লাহ। দুপুর ১২টায়”
পরে ১২টায় দীর্ঘ ৫০মিনিটের ভাষণের তিনি বলেন,কওমী অঙ্গনে আমাদের মহল থেকে এবং বাহিরের একটা চক্র জোট বেঁধে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করাচ্ছে।
আমাকে এবং আমার আন্দোলনকে প্রতিহত করতে তারা জামাত শিবিরের ট্যাগ লাগিয়ে দিচ্ছে,এই সরকারের আমলে কাউকে সহজে ঘায়েল করতে হলে তাঁকে জামায়াত শিবির ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়। এবং তাকে সরকার অতিসহজে ঘায়েল করতে সক্ষম হয়। ফলে আমাকে প্রতিহত করতেও একই পদ্বতি অবলম্বন করে আমাকেও জামায়াত শিবিরের ট্যাগ লাগানো হল। তবে যদি কখনও সুন্নী,আহলে হাদীস, জামায়াত এবং আমাদের মহলের সকল দলমত একত্রিত হতে পারে তাহলে আমি সেখানে সমর্থণ দিবো এবং অংশ গ্রহনও করবো। আর সেটা ভিন্ন কথা।
জামায়াত ও মওদুধী সাহেবের ব্যপারে মামুনুল হক বলেন জামায়াত সম্পর্কে আমার বক্তব্যে পরিস্কার যেমনটা বক্তব্য ছিলো আমাদের পূর্বপুরুষদের।
তিনি আরো বলেন,আমাদের অঙ্গনের আমাদের মহলের কিছু দালাল পরাজিত গুষ্ঠি এবং মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী ও মেঘনার এক আলেমসহ এসব ষড়যন্ত্র করে প্রশাসনকে আমার ব্যাপারে ভুল বুঝিয়েছেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
তিনি আরো বলেন, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী একজন মাজলুম সেজন্য আমি তাঁর পক্ষে কথা বলেছি। এই পরাজিত মহলটি বদনাম উঠালো যে, আমার নির্দেশে নাকী হাটহাজারী ছাত্র আন্দোলন হয়েছে। হাটহাজারী ছাত্র আন্দোলন একটা সফল আন্দোলন তবে সেটা আমার নির্দেশে হয়নি আমি এটার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই।
এবং মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈফী ও মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী কেন বার বার মাওলানা মামুনুল হক ও তাঁর স্ত্রী এবং তাঁর পরিবারকে জামায়াত শিবির ট্যাগ দিয়ে কথা বলেছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। মামুনুল হকের স্ত্রীকে ও শশুরকে জামাতের রোকন বলেও অভিযোগ করেন এই দুই আলেম। অতচ মাওলানা মামুনুল হকের দাবি তাদের কেউই জামায়াতের কোন দলের সাথে সম্পর্কে নেই বরং তার শশুর একজন তাবলীগওয়ালা মানুষ বলে তিনি জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে মাওলানা মামুনুল হক দেশের শীর্ষ আলেমদের কাছে তদন্তের দাবী জানান,তাঁরা যেন বিষয়টা তদন্ত করেন।
সর্বশেষ মাওলানা মামুনুল হক বলেন,আমার কণ্ঠ চেপে ধরলেও মূর্তি ও ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে বলেই যাবো বলেই যাবো।
এবার আমার যতই বিপদ আসুক আমাকে যতই হুমকী দিক আমাকে নিয়ে যতই ষড়যন্ত্র করুক আমি কথা বলবোই।
তিনি আরো বলেন,বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ছিলেন একজন মুসলমান,এবং তিনি ইসলাম নিয়ে কবরে গিয়েছেন, সুতরাং তার ভাস্কর্য নির্মাণ করে আল্লাহর সামনে তাকে লজ্জিত করবেন না।
উল্লেখ্য,হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই মাওলানা মামুনুল হকের দেশব্যাপী প্রোগ্রামের বিষয়ে প্রশাসন কঠিন অবস্থানে রয়েছে,ইতিমধ্যে তার অধিকাংশ প্রোগ্রাম প্রশাসন কর্তৃক বন্ধ করা হয়েছে,এবং আমীরে হেফাজত আল্লামা বাবুনগরীর প্রোগাম গুলোতেও একই ভূমিকা রাখছে প্রশাসন। গত ২২জানুয়ারি নড়াইলের প্রোগামকে প্রশাসন কঠিনভাবে বাধা প্রদান করে,এবং পরবর্তিতে স্থানিয় সাংসদ ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা মাওলানা মামুনুল হকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন,এবং পরবর্তিতে তার বাসায় আমন্ত্রণ জানান। সাংসদ মাশরাফী বলেন,আপনার প্রোগামের বিষয়ে আমি মোটেও জানতাম না,যদি আমাকে আগে জানানো হতো তাহলে আমি পূর্ব ব্যবস্থা নিয়ে রাখতাম,অন্তত আমার বাসায় এনে আপনাকে অন্ততো আপ্যায়নতো করতে পারতাম।