ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে সিআইডির দুই হাজার কোটি টাকার মানি লন্ডারিং এর অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হলেন আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌরসভার কাউন্সিলর শেখ মো. জলিল (৪৮)।
বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে ফরিদপুর শহরের রেল স্টেশন বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পুলিশ।
শেখ মো. জলিল শহরের লক্ষ্মীপুর মহল্লার মৃত শেখ মো. আলাউদ্দিনের ছেলে। ফরিদপুর পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ড (সাবেক সাত) আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাত নম্বর ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর। আগামী ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় ফরিদপুর পৌরসভার নির্বাচনে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মো. জলিল।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, বরকত-রুবেল এর নামে দায়ের করা মানি লন্ডারিং মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঢাকার চাহিদা অনুযায়ী ওই মামলার আসামি হিসেবে জলিলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ওসি বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলেই জলিলকে জেলার মূখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে পরে সিআইডি ঢাকা তাকে ফরিদপুর জেল থেকে তাদের হেফাজতে নেবে।
জলিলের বিরুদ্ধে টেপাখোলা গরু হাটে চাঁদাবাজির অভিযোগে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি মামলা রয়েছে। তবে ওই মামলায় তিনি বর্তমানে জামিনে আছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে জমি দখল ও রেলওয়ের জমি দখল করে নিজে ব্যবহার ও ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
প্রসঙ্গত গত গত ২৬ জুন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ বাদী হয়ে ঢাকার কাফরুল থানায় মানি লন্ডালিং এর অভিযোগ এনে বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করেন।
এ মানি লন্ডারিং মামলায় ওই দুই ভায়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধনী ২০১৫ এর ৪(২) ধারায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়।
এ মামলাটি তদন্ত করছেন ঢাকা মেট্রপলিটান পশ্চিম বাংলাদেশ পুলিশ সিআইডি ঢাকা এর সহকারি পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস।
উত্তম কুমার বিশ্বাস বলেন, বরকত ও রুবলেসহ মানি লন্ডারিং মামলায় এ পর্যন্ত ১০জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ এ মামলার আসামি হিসেবে ফরিদপুরে শেখ মো. জলিলকে গ্রেফতার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। তাকে আগামী রবিবার ঢাকা মেট্রপলিটার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলায় ‘শ্যোন এরেস্ট’ দেখানো হবে। জলিলকে নিয়ে এ মামলায় গ্রেফতারের সংখ্যা হবে ১১জন।
ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সধারণ সম্পাদক এবং তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ছিলেন। গত ৭ জুন তাদের গ্রেপ্তার করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামালার আসামি হিসেবে। এ গ্রেফতারের পর শহর আওয়ামী লীগ ও ফরিদপুর প্রেসক্লাব থেকে বহিষ্কৃত হন দুই ভাই।
গত ১৬ মে রাতে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামাট এলাকার মোল্লাবাড়ি সড়কে অবস্থিত সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ১৮ মে সুবল চন্দ্র সাহা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।