ইলিশ সংরক্ষণের সুফল মিললো পাঙ্গাস মাছেও

দেশের কয়েকটি এলাকার নদীতে গত সপ্তাহ দুয়েক ধরে বিপুল পরিমাণ পাঙ্গাস মাছ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে। মৎস্য কর্মকর্তা ও মৎস্য গবেষকরা বলছেন ইলিশ মাছ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে কিছু পদক্ষেপ নেয়ার সুফল হিসেবে অন্যান্য বছরের তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি ও বড় আকারের পাঙ্গাস মাছ এ বছরে ধরা পড়ছে।

মূলত মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ী, রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলা সংলগ্ন পদ্মা নদীতে বিপুল পরিমাণ পাঙ্গাস মাছ ধরা পড়ার ঘটনা ঘটছে গত কয়েক সপ্তাহে।

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা জাকির হোসেন মৃধা জানান, ঐ এলাকা সংলগ্ন অঞ্চলে অন্যান্য বছরের তুলনায় অন্তত ২৫ ভাগ বেশি পাঙ্গাস মাছ ধরা পড়েছে এ বছর।

মুন্সিগঞ্জের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবদুল আলীম বলেন, “এই বছরে বিপুল পরিমাণ পাঙ্গাস মাছ পাওয়া গেলেও এটি আসলে কয়েক বছরের মৎস্য সংরক্ষণ কার্যক্রমের সুফল।”

মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য গত কয়েক বছর থেকে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ইলিশ মাছ ধরার ওপরে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। ঐ নিষেধাজ্ঞা ইলিশের পাশাপাশি পাঙ্গাস মাছের সংখ্যা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করেন মৎস্য কর্মকর্তা আবদুল আলীম।

“মা ইলিশ রক্ষায় গত কয়েক বছর ধরে যে ২২ দিন মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়, তার পাশাপাশি সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা বা জাটকা ধরার নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপগুলোও পাঙ্গাস মাছের সংখ্যা বাড়ানোর পেছনে ভূমিকা রেখেছে।”

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আখেরী নাইমা বলেন, পাঙ্গাস মাছের বংশবিস্তার পদ্ধতি এবং ডিম পাড়ার সময় অনেকটা ইলিশ মাছের সাথে মিলে যায়, যে কারণে ইলিশ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে নেয়া পদক্ষেপ পাঙ্গাস সংরক্ষণেও ভূমিকা রেখেছে।

আখেরী নাইমা বলেন, “ইলিশ মাছের মত গভীর সমুদ্রে না গেলেও পাঙ্গাস নদীর মোহনা অঞ্চলে থাকে। বছরের এই সময়টায়, যখন ইলিশ মাছ ডিম পাড়ার জন্য নদীতে আসে, তখন পাঙ্গাসও নদীতে আসে। আর প্রায় দুই-তিন সপ্তাহ মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞার পর এই সময়টায় বেশি পরিমাণ বড় আকৃতির পাঙ্গাস জেলেদের জালে ধরা পড়ে।”

পাশাপাশি নির্দিষ্ট বিরতিতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞার কার্যক্রম টানা কয়েক বছর ধরে বাস্তবায়িত হতে থাকায় ইলিশ মাছের পাশাপাশি পাঙ্গাস মাছের বসবাসের জন্য অনুকূল পরিবেশ নদীতে তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন আখেরী নাইমা।

মুন্সিগঞ্জ জেলার মৎস্য কর্মকর্তা আবদুল আলীম মনে করেন জেলেদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে পারলে এবং মৎস্য সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে নেয়া সরকারের পদক্ষেপগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন করতে পারলে পাঙ্গাসের উৎপাদন আরো কয়েকগুণ বাড়ানো সম্ভব।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে পাঙ্গাসের পোনা ধরা আইনত নিষিদ্ধ থাকলেও অনেক জেলেই লুকিয়ে এসব পোনা ধরে। চাঁদপুরে একসময় বড় আকৃতির চাঁই ব্যবহার করে পোনা ধরা হতো। গত কয়েকবছরে কর্তৃপক্ষের ব্যাপক প্রচারণা ও অভিযানের পর ঐ ধরণের কার্যক্রম অনেক কমেছে।”

গত কয়েক বছরে নদীর মাছ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে নেয়া এই ধরণের উদ্যোগগুলোই নদীতে পাঙ্গাসের উপস্থিতি বাড়ানোর পেছনে ভূমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করেন আবদুল আলীম।

এছাড়া গত মাসে দুই দফা নিম্নচাপ হওয়ার কারণেও নদীতে মাছের সংখ্যা বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন আবদুল আলীম।

“নভেম্বরের এক তারিখ থেকে আগামী জুন পর্যন্ত জাটকা মাছ ধরার ওপরে নিষেধাজ্ঞা থাকবে, তবে অনেক জেলেই এসময় লুকিয়ে মাছ ধরে। জেলেদের সচেতন করা গেলে এবং এই নিষেধাজ্ঞাগুলো এক-দুই বছর সঠিকভাবে বাস্তবায়ন ক

Share this post

scroll to top