ভারতে পাচারের প্রস্তুতিকালে ময়মনসিংহে কবর থেকে চুরি করা মানুষের মাথার ১২টি খুলি ও দুই বস্তাভর্তি কঙ্কালসহ আন্তর্জাতিক পাচারকারি চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় কঙ্কাল পরিস্কার করার দুই কন্টেইনার তরল কেমিক্যাল ও তিন প্যাকেট গুড়া কেমিক্যাল উদ্ধার করা হয়। শনিবার দিবাগত রাত দু’টোর দিকে নগরীর রামকৃষ্ণ মিশন রোড এলাকার একটি বাসা থেকে এসব কঙ্কাল উদ্ধার এবং বাপ্পী (৩২) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত বাপ্পী নগরীর কালিবাড়ী কবরস্থান এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে।
কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ তালুকদার জানান, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের প্রস্তুতিকালে গোপনসূত্রে খবর পেয়ে গত শনিবার দিবাত রাত দু’টোর দিকে নগরীর রামকৃষ্ণ মিশন রোড এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালানো হয়। এসময় কবর থেকে চুরি করা মানুষের মাথার ১২টি খুলি ও দুই বস্তাভর্তি বিভিন্ন অঙ্গের কঙ্কাল, দুই কন্টেইনার তরল ক্যামিকেল ও তিন প্যাকেট গুড়া কেমিক্যালসহ ভাড়াটিয়া বাপ্পীকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি জানান, এসব কঙ্কাল রোববার ভোরে জেলার হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে চোরাইপথে ভারতে পাচার করার কথা ছিল। গ্রেফতারকৃত বাপ্পী আন্তর্জাতিক পাচারকারি চক্রের একজন সদস্য। এরআগেও কঙ্কালসহ ধরা পড়ে ৬ মাস হাজতে ছিল। সেই থেকে পুলিশ তাকে নজরদারী করছিল। গোপনসূত্রে খবর পেয়ে এসব কঙ্কাল পাচারের প্রস্তুতিকালে আবার সে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাপ্পী পাচারকারি চক্রের কয়েকজনের নাম বলেছে। পুলিশ তাদের সবাইকে আটকের অভিযান চালাচ্ছে। চক্রের সদস্য সংখ্যা কত তা এখনো জানা যায়নি। তবে এদের কেউ মানুষ মারা গেলে কোথায় কবে কবর দেয়া হলো খোঁজ রাখে। কেউ কবর থেকে কখন কীভাবে কঙ্কাল চুরি করা যাবে তার খোঁজ রাখে। কেউ চুরি করা কঙ্কাল কবর খুড়ে তুলে এনে কেমিক্যাল দিয়ে পরিস্কার করে। একটি চক্র এসব কঙ্কাল সংগ্রহ করে দেশের মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করে।
তিনি আরো জানান, ভারত ও নেপালসহ যে সব দেশে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা হয় সেইসব দেশে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের জন্য কঙ্কাল উচ্চমূল্যে বেচাকেনা হয়। প্রতিটি কঙ্কাল ২০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় বেচাকেনা হয়। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।#