ময়মনসিংহের নির্যাতিত সেই কিশোরীর পা কেটে ফেলতে হবে!

ময়মনসিংহে চার বখাটের নির্মম নির্যাতনে পঙ্গু হয়ে দেড় মাস ধরে শয্যাশায়ী ওই কিশোরীর ভেঙে দেয়া পায়ে ইনফেকশন দেখা দিয়েছে। এই কারণে তার বাম পা কেটে ফেলতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এই ঘটনাটি ঘটে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার বারবাড়িয়া ইউনিয়নের পাকাটি গ্রামে।

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, গত ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে কিশোরী তানিয়া নানার বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। রাস্তায় সোহাগ তাকে একা পেয়ে নানার বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে রিকশায় তুলে পাশের চিলাকান্দা গ্রামের জনৈক মকবুল মিলেটারির বাড়ির পাশের একটি জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়।

সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিল বিপ্লব, নাজমুল ও বাবু। পরে তারা জোর করে পাশের জঙ্গলে নিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় কিশোরীর চিৎকারে ধর্ষণে ব্যর্থ হয় তারা। পরে লোহার শাবল দিয়ে পিটিয়ে কিশোরী তানিয়ার বাম পা ভেঙে দেয় এবং সারা শরীর রক্তাক্ত জখম করে।

কিশোরীর বাবা তফাজ্জল হোসেন বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখান থেকে পরবর্তীতে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে প্রায় দেড় মাস চিকিৎসা করানোর পর তার পায়ে ইনফেকশন ধরা পড়ে। ইনফেকশনের ফলে মেয়ের পা কেটে ফেলতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

তানিয়ার বাবা বলেন, এ ঘটনায় ওই চার বখাটের নামে মামলা করার কয়েকদিন পরই আসামিরা আগাম জামিনে এসে এলাকায় বুক ফুলিয়ে হাঁটে। তারা মামলা তুলে নিতে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে।

তফাজ্জাল হোসেন বলেন, গত ২৭ সেপ্টেম্বর মামলা করার জন্য আমি থানায় একটি অভিযোগ দেই। ওই অভিযোগ আমি প্রথমে উল্লেখ করেছিলাম, ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে আমার মেয়েকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে। কিন্তু দুই দিন পর রাত ১টার দিকে থানার দারোগা আনোয়ার চিশতি আমাকে পাকটি বাজারে ডেকে নেন। তখন আগের এজাহার পাল্টে নতুন একটি এজাহারে আমার স্বাক্ষর নেন।

তফাজ্জল বলেন, আমি অশিক্ষিত বিধায় কিসের কাগজে স্বাক্ষর করছি তখন তা বুঝতে পারিনি। পরে শুধু পিটিয়েছে এমন অভিযোগে মামলা রুজু করেন থানার ওসি। আমি তখন প্রতিবাদ করলে ওসি সাহেব বলেন, ওইদিন ধর্ষণচেষ্টার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

তবে অভিযোগ পাল্টে দেয়ার কথা অস্বীকার করে গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অনুকুল সরকার বলেন, ওই সময় ধর্ষণের চেষ্টার কোনো অভিযোগ জানাননি বাদী। মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দেয়ার বিষয়টি ভিকটিমের পরিবার থানায় জানায়নি। যত দ্রুত সম্ভব এ মামলার চার্জশিট দেয়া হবে।

Share this post

scroll to top