ফিটনেস টেস্টে সর্বোচ্চ স্কোর সাকিবের

পাক্কা এক বছর ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন সাকিব আল হাসান। নিষেধাজ্ঞার শেষ মুহূর্তে কেবল কয়েক সপ্তাহের জন্য বিকেএসপিতে ব্যক্তিগত ক্যাম্প করেছিলেন। তাতেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। বুধবার সর্বোচ্চ স্কোর করে ফিটনেস টেস্টে পাস করেছেন সাকিব।

গত দুই দিনে ফিটনেস টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন প্রায় একশোর বেশি ক্রিকেটার। সেখানে সর্বোচ্চ স্কোর ছিল পেসার মেহেদী হাসানের। তার স্কোর ছিল ১৩.৬। বুধবার মেহেদীকে পেছনে ফেলে সাকিব সর্বোচ্চ ১৩.৭ স্কোর নিয়ে ফিটনেস টেস্টের বৈতরণী পার করলেন।

বিপ টেস্টে সর্বনিম্ন স্কোর করা ক্রিকেটারদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন—নাসির হোসেন, সোহাগ গাজী। বিপ টেস্টে নাসির পেয়েছেন সর্বনিম্ন স্কোর ৮.৫। এছাড়া ‘বুড়ো’ হয়ে যাওয়া ক্রিকেটার আবদুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ আশরাফুল, শাহরিয়ার নাফিস ১১-এর ওপর স্কোর নিয়ে উতরে গেছেন এই টেস্ট।

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ সামনে রেখেই এই ফিটনেস টেস্টকে মানদণ্ড হিসেবে বেছে নিয়েছে বিসিবি। টুর্নামেন্টে অংশ নিতে হলে বিপ টেস্টে পাস করার বিকল্প নেই।

অথচ বেশি দিন হয়নি সাকিব দেশে ফিরেছেন। শুক্রবার দিবাগত রাতে দেশে ফিরলেও ফিটনেস টেস্টের জন্য তাকে অপেক্ষায় রাখা হয়। সোমবার তার ফিটনেস টেস্ট দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জাতীয় দলের ফিজিও জুলিয়ান কেলাফতের সঙ্গে বাড়তি কাজ করার সুযোগ দিতেই পরে সাকিবের ফিটনেস টেস্ট পেছানো হয়। এর মাঝে দুইদিন কাজ করার পর বুধবার সকালে ফিটনেস পরীক্ষা দেন সাকিব।
সাকিবের ফিটনেস নিয়ে বিসিবির ট্রেনার তুষার কান্তি হাওলাদার বলেছেন, ‘খুব ভালো অবস্থায় আছে সাকিব। এর আগে সাকিবকে আমি এমন স্কোর গড়তে দেখিনি। সাকিব হার্ডওয়ার্ক করে পরিশ্রমের ফল পেয়েছে। এক বছর সাকিব ক্রিকেটের বাইরে ছিল, কিন্তু আমি নিশ্চিত সে ফিটনেসের কাজটা ঠিকমতোই করেছে।’

অন্য ক্রিকেটার ও সাকিবের মধ্যে পার্থক্য জানতে চাইলে বিসিবির এই ট্রেনার বলেছেন, ‘বড় পার্থক্য হচ্ছে সাকিবতো সাকিবই। আমরা সবাই জানি ও অন্য ধাতুর গড়া। সাকিব-মুশফিকরা অন্য ধাতুর তৈরি। ওদেরকে দেখে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই।’

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে হঠাৎ গুঞ্জন ওঠে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন সাকিব। পরে অবশ্য সন্ধ্যা নামতেই গুঞ্জনটা নির্মম সত্য হয়ে আসে। জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করায় আইসিসির দুর্নীতি দমন কোডের ২.৪.৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তিনটি অভিযোগ এনে সাকিবকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি। তবে ভুল স্বীকার করায় এক বছরের শাস্তি স্থগিত রাখা হয়।

অবশ্য নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার আগে শ্রীলঙ্কা সফরের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় গত আগস্টেও সাকিব দেশে ফিরেছিলেন। সেই সময় নিষেধাজ্ঞার কারণে বিসিবির কোনও সুযোগ-সুবিধা নিতে পারেননি। তাই নিজেকে প্রস্তুত করতে বিকেএসপিকে বেছে নিয়েছিলেন। সেখানে কয়েক সপ্তাহ অনুশীলন করেছিলেন শৈশবের দুই কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের তত্ত্বাবধানে। সবমিলিয়ে ২৫ দিন বিকেএসপিতে অনুশীলন করে অনেকটাই প্রস্তুতি সেরে রেখেছিলেন। কিন্তু পরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় লঙ্কান সফরটি স্থগিত হয়ে যায়। তাই ১ অক্টোবর ফের যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ধরে পরিবারের কাছে ফিরে যান তিনি।

Share this post

scroll to top