বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় দেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে গিয়েছিল মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, তারা অব্যাহতভাবে গত ১২ বছর ধরে দেশকে অন্ধকারের দিকেই নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে সরকারি বাসভবনে চলচ্চিত্র প্রযোজক ও প্রদর্শক সমিতির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস ও আইন সম্পাদক আর এম ইউনুস রুবেল এসময় উপস্থিত ছিলেন।
নূর হোসেন দিবসে বিএনপির অভিযোগ- ‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে, নির্বাচন কমিশনকে দলীয়করণ করেছে’ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপির এসব গদবাঁধা অভিযোগ আমরা গত এক যুগ ধরে শুনে আসছি। বিএনপি যে জনগণকে নিয়ে ভাবে না, তারই বহিপ্রকাশ হচ্ছে- তাদের সব বক্তৃতা-বিবৃতি, আন্দোলন-সংগ্রাম সবই নির্বাচন কমিশন আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার কেন্দ্রিক। আর বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করেছে বিএনপি।’
‘বিএনপির জন্মই হয়েছে অগণতান্ত্রিকভাবে, শতশত সেনা অফিসার হত্যার মাধ্যমে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার সময় বিএনপি কিভাবে দেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে গিয়েছিল তা সবাই জানে। তখন দেশ দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন। হাওয়া ভবনে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা আর খোয়াব ভবনে ছিল আমোদ-ফূর্তি। তখন বাংলা ভাই, শায়খ আব্দুর রহমান এই সব জঙ্গির উত্থান ঘটেছিল। দেশে আদালতে বোমা, রাজপথে বোমা, ৬৩টি জেলায় পাঁচশ’র বেশির স্থানে একযোগে বোমা, এগুলো বিএনপির আমলেই হয়েছিল।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য শুধু নির্বাচন বর্জনই নয়, নির্বাচন বানচালের জন্য পেট্রোল বোমা মেরে শতশত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাকে বোমা মেরে, পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সভ্য দুনিয়ার কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। সে কারণে কানাডার আদালতের রায়ের মধ্যে বিএনপিকে একটি সন্ত্রাসী দল হিসেবে বলা হয়েছে। সুতরাং আন্তর্জাতিকভাবে আদালতে সন্ত্রাসী দল হিসেবে স্বীকৃত বিএনপি’র মুখে এসব কথা শোভা পায় না।’
এসময় ১৯৮৭ সালের এই দিনে শহীদ নূর হোসেন স্মরণে ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে এক জীবন্ত পোস্টার হিসেবে সবসময় নূর হোসেনের নাম রক্তাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে, এই ক্ষেত্রে নূর হোসেনের অবদান চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে আসার পর থেকেই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। যে গণতন্ত্র বারবার জিয়াউর রহমান, এরশাদ সরকারের হাতে বন্দি ও ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, সেই গণতন্ত্রকে তিনি ফিরিয়ে এনেছেন।
চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং হল মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন, গত মাসের ১৬ তারিখ থেকে সিনেমা হলগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। করোনাসহ বিভিন্ন কারণে বিশেষ করে নতুন ছবি মুক্তি পায়নি, সে কারণে সিনেমা হলে আশানুরূপ দর্শক হচ্ছে না। এই পরিস্থিতি উত্তরণে নতুন সিনেমা মুক্তি দেওয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’