রাত দুইটায় আসলেন দেশে। পরদিন সকাল ১১টার কিছু সময় পর তার দেখা মিলল গুলশানে, সুপারসপ উদ্বোধনে। নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পাওয়া সাকিব আল হাসান ঢাকায় পা রেখে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ব্যস্ত সময় কাটালেন। তবে দেশে ফিরেই সাকিব ভাঙ্গলেন স্বাস্থ্যবিধি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোয়ারেন্টাইন বিষয়ক বিধি ভঙ্গ করলেও দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিবি তার কোনো দায়িত্ব নিচ্ছে না। বিসিবির ভাষ্য, জৈব সুরক্ষা বলয়ে ঢোকার পরই বিসিবির অধীনে থাকবেন সাকিব।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোয়ারেন্টাইন বিষয়ক বিধিতে আছে, কোনো বাংলাদেশি নাগরিক বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এলে তার যদি করোনা নেগেটিভের মেডিক্যাল সার্টিফিকেট না থাকে, তাহলে তাকে অবশ্যই প্রথম ১৪ দিন ঢাকায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। আর যদি তার সেই সার্টিফিকেট থাকে তাহলে সেই যাত্রীকে ১৪ দিন নিজ বাড়িতে অথবা স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
সাকিবের জন্যও একই বিধি প্রযোজ্য বলে নিশ্চিত করলেন স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘কোনো বিদেশফেরত যাত্রী যদি করোনা নেগেটিভের মেডিক্যাল সার্টিফিকেট সঙ্গে নিয়ে আসেন তাহলে তাকে নিজ বাসায় অথবা নিজের তত্ত্বাবধানে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন পালন করতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাকিব নিয়ে এসেছেন করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট। তার জন্য হোম কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক ছিল। যদিও সেসবের তয়োক্কা না করে সাকিব যোগ দেন সুপারশপের উদ্বোধনে। যেখানে ছিল উৎসুক মানুষের ভিড়, তাদের অনেকেরই ছিল না মাস্ক। একপর্যায়ে আয়োজকদের অনুরোধে সাকিবকেও দেখা গেল মাস্ক খোলা অবস্থায়।
শীত মৌসুমকে সামনে রেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাল্লা দিয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে চলছে। এজন্য সীমান্ত অতিক্রম করলেই তাকে থাকতে হচ্ছে কোয়ারেন্টাইনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার নির্দেশ দিয়েছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে। এর অংশ হিসেবে বিদেশ থেকে আগত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইন যথাযথভাবে পালনের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
বিসিবির বিদেশি কোচরা যখন নিজ নিজ দেশ থেকে এসেছিলেন বাংলাদেশে, নিয়ম মেনেই কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। কোভিড পরীক্ষায় নেগেটিভ হওয়ার পর বিশেষ অনুমতি নিয়ে তারা যোগ দেন অনুশীলনে। সাকিবের জন্য একই প্রক্রিয়ায় এগিয়ে ছিল বিসিবি। কিন্তু দেশে আসার পরদিনই সাকিব যে জনস্রোতের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তা ছিল বিসিবির ধারণারও বাইরে।
বিসিবির পরিচালক ও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান বলেন, ‘সাকিবকে অবশ্যই প্রক্রিয়ার ভেতরে থাকতে হতো। এ মুহূর্তে কিছু বলার নেই। জৈব সুরক্ষা বলয়ে ঢোকার পর আমাদের দায়িত্বে সে। এখন সে আমাদের অধীনে নেই। ’
প্রসঙ্গত, গত ২৯ অক্টোবর দেশে ফিরে পরদিনই অনুশীলনে যোগ দিয়েছিলেন জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। তবে এর আগে করোনা পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ হয়েছিলেন তিনি। শনিবার সাকিবের কোভিড পরীক্ষা হবে। পরীক্ষায় নেগেটিভ হলে সোমবার হবে তার ফিটনেস পরীক্ষা। এরপর ধাপে ধাপে ক্রিকেট মাঠে ফিরবেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।