মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পুলিশের চারটি তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালিয়ে ১৩ জনকে হত্যা করেছে বৌদ্ধ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ‘আরাকান আর্মি’। এসময় অপর ৯ জন আহত হয়েছে বলে আল জাজিরা টেলিভিশন জানিয়েছে।
দেশটির সেনাবাহিনীর দফতর থেকে বলা হয়েছে, শুক্রবার স্বাধীনতা দিবসে উত্তর রাখাইনের বুথিডং ও মংডুর চারটি পুলিশ ফাঁড়িতে অন্তত সাড়ে তিনশ বিদ্রোহী হামলা চালায়। হামলার সময় বিদ্রোহী গোলাবারুদ-অস্ত্রও লুট করেছে বলে সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে। তবে আরাকান আর্মির দাবি, তাদের এই হামলা স্বাধীনতা দিবসকে লক্ষ্য করে না।
আরাকান আর্মির মুখপাত্র খিন থু বলেছেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানের পাল্টা জবাবে এ হামলা চালানো হয়েছে। আরাকান আর্মি নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্যকে আটক করেছে জানিয়ে খিন থু বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আমরা তাদের ক্ষতি করব না।’
এদিকে, সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জ মিন তুন জানিয়েছেন, বুথিডং ও মংডুতে শুক্রবারের হামলার পাল্টা ব্যবস্থা নিচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। নিরাপত্তার স্বার্থে সেনাবাহিনী ওই অঞ্চলে তাদের অভিযান অব্যাহত রাখবে। তবে শুক্রবারের হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর ঠিক কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিশ্চিত করেননি।
তিনি বলেন, হামলার শিকার পুলিশ পোস্টগুলো বিভিন্ন জাতি ও বর্ণের লোকদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য। তাই এগুলোতে হামলা করা উচিত না।
গত কয়েকসপ্তাহ ধরে রাখাইনে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ্যটিতে বেশ কয়েকবার নিরাপত্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাত জোরদার হয়েছে। আরাকান আর্মি রাখাইনের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে বিদ্রোহ করে আসছে।
গত মাসে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী শান্তি আলোচনা শুরু করার জন্য দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে জাতিগত স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে যুদ্ধরত বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপগুলোর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। তবে রাখাইনকে ওই ঘোষণার বাইরে রাখা হয়। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এই রাজ্যেই মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের মুখে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
সূত্র : পার্সটুডে