ঝিনাইদহে ভুয়া ডিবি পুলিশের অত্যাচের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। পুলিশের মতো হ্যান্ডকাপ নিয়ে ঘুরছে একটি প্রতারক চক্র। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া যুবকদের টার্গেট করে এই প্রতারকরা ঘুরছে সারা জেলায়।
জানা যায়, বুধবার বিকেলে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চান্দুয়ালী গ্রামের শরিফুলের ছেলে রকিবুল ও বাচ্চুর ছেলে সুবজ মিয়া ভুয়া ডিবি পুলিশের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন। চান্দুয়ালী গ্রামের সুবজ মিয়া জানান, বুধবার বিকেলে ঝিনাইদহ শহর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। সাথে ছিল দুইটি পাসপোর্ট, নগদ টাকা ও দামী ৩টি মোবাইল। তারা মোটরসাইকেলযোগে সদর উপজেলার নগরবাথান বাজার পার হতেই লাল কালো পালসার মটরসাইকেলে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে থামতে বলে।
কলেজপড়ুয়া ওই দুই যুবক থামতেই তাদের দেহ তল্লাশি শুরু করে কথিত ডিবি পরিচয়দানকারী প্রতারকচক্রটি। এরপর দুইজনের পকেট থেকে ৩ হাজার ৪৫০ টাকা, ৩টি দামী মোবাইল ও দুইটি পাসপোর্ট নিয়ে ঝিনাইদহ ডিবি অফিসে আসতে বলে। তাদের পিছু পিছু আসতেই তারা অন্যপথে হাওয়া হয়ে যায়। ঝিনাইদহ শহরে এমন ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার সাতব্রীজ এলাকায় লালন শাহ কলেজের ৩ ছাত্রের কাছ থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ৩/৪টি মোবাইল হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্র। এদের একজন লালন শাহ কলেজের ছাত্র জোড়াদহ গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে জহুরুল ইসলাম।
তিনি জানান, ঘটনার দিন নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে দুইজন ব্যক্তি বলে- তোমাদের মোবাইলে পর্নো ছবি আছে, চেক করবো। এ সময় তারা কোচিং করে বাড়ি ফিরছিলেন। প্রতারকরা আমার নিজের মোবাইলসহ বন্ধুদের কাছ থেকে সবকটি মোবাইল নিয়ে হরিণাকুন্ডু থানায় আসতে বলে। এরপর পিছু পিছু আসতে আসতে ওই দুইজন পালসার গাড়িতে হাওয়া হয়ে যায়।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশের ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, এরা আসলেই প্রতারক। আমরা এই প্রতারক চক্রের সন্ধান করছি। তিনি বলেন, কারো কাছে এদের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য থাকলে আমাদের জানাতে পারেন।
অন্যদিকে ঝিনাইদহ পোসট আফিস মোড় থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে শৈলকূপার ওষুধ ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। তিনি শৈলকূপার খড়িবাড়িয়া বাজারের সৈকত ফার্মেসির মালিক।
বিশ্বজিৎ বিশ্বাস জানান, তিনি ওষুধ কেনার জন্য ঝিনাইদহে আসেন। এসময় ঝিনাইদহ পোস্ট অফিস মোড়ে সাদাপোশাকে পিস্তালধারী দুজন ডিবি পরিচয়ে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। পাশে একটি দোকানে নিয়ে হুমকি দিয়ে প্রথমে ২০হাজার ও পরে আরো ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
তিনি আরো বলেন, কয়েকদিন পর ০১৩০৭৬৬১৩৫৫ নম্বর থেকে মোবাইল ফোনে আরো ৩০ হাজার টাকা দাবি করে এবং বারবার হুমকি দিতে থাকে। বিষয়টি সাংবাদিকদের ও উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাকে জানানোর পরও টাকা চাওয়া বন্ধ হয়নি বলে বিশ্বজিৎ অভিযোগ করেন।