খাশোগি হত্যা মামলা : ৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের প্রার্থনা

ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার ঘটনায় ১১ জনকে অভিযুক্ত করে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো সৌদি আরবের আদালতে শুনানি হয়েছে। যেখানে সৌদি আরবের অ্যাটর্নি জেনারেল পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করেছেন। শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে রিয়াদে। এক বিবৃতিতে অভিযুক্তদের সবাইকে আইনজীবীর সুবিধা দেয়ার দাবি করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ‘সৌদি প্রেস এজেন্সি’ এ খবর জানিয়েছে।

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সমালোচক সাংবাদিক জামাল খাশোগি গত ২ অক্টোবর দুপুরে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে অবস্থিত সৌদি কনসুলেটে প্রবেশ করেন। সেখানে তাকে হত্যা করা হয়। তুর্কি আরব মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান তুরান কিসলাকসি একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দাবি করেছিলেন, খাশোগিকে হত্যা করে তার লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে। সৌদি আরব এই অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছিল, কনসুলেটে প্রবেশের কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি বের হয়ে গেছেন। পরে তারা দাবি করে, এজেন্টদের সাথে ‘হাতাহাতিতে’ খাশোগির মৃত্যু হয়েছে।

খাশোগি হত্যার ঘটনায় যে ১১ জনকে অভিযুক্ত করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের অ্যাটর্নি জেনারেল তাদের পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করেছেন আদালতের কাছে। অভিযুক্তদের বিষয়ে সংগৃহীত প্রমাণ সরবরাহের জন্য সৌদি আরব তুরস্কের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মোহাম্মদ বিন সালমানের দিকে আঙুল তুলেছে এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে। তুর্কি সংবাদমাধ্যম খাশোগি হত্যার অংশ নেয়া যুবরাজের পাঠানো এজেন্টদের ছবি প্রকাশ করেছে।

তুরস্ক অব্যাহতভাবে অভিযোগ করে আসছে, জামাল খাশোগির হত্যার তদন্তের বিষয়ে সৌদি আরব সহায়তা করছে না। তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন, ‘যে ১১ জনকে আটক করার দাবি করেছে সৌদি আরব, তাদের বিষয়ে তুরস্ককে কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। যদি তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় তাহলে তাকে আঙ্কারা কোনোভাবেই স্বাগত জানাবে না। তাদেরকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হবে, যাতে তারা মুখ খুলতে না পারে।’

এ দিকে গত রোববার তুর্কি টেলিভিশন চ্যানেলে হাবের নিরাপত্তা ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওচিত্র প্রকাশ করে তুর্কি টেলিভিশন চ্যানেল ‘এ হাবের’ রোববার দাবি করেছে, কনসাল জেনারেলের বাসভবনে যে তিন ব্যক্তিকে পাঁচটি সুটকেস ও তিনটি ব্যাগ নিয়ে ঢুকতে দেখা গেছে তারা সাংবাদিক জামাল খাশোগির দেহাবশেষ বহন করেছে। সুটকেস ও ব্যাগগুলো প্রথমে সৌদি আরবের কনসুলেট ভবনের গ্যারেজ থেকে একটি মিনিবাসে তোলা হয়। তারপর অল্প দূরেই অবস্থিত কনসাল জেনারেলের বাসভবনে নিয়ে রাখা হয়।

অন্য দিকে তুর্কি সংবাদপত্র হুররিয়াত ডেইলি গত সোমবার প্রকাশিত এক খবরে দাবি করেছে, সাংবাদিক জামাল খাশোগির দেহাবশেষ সৌদি আরবের কনসাল জেনারেলের বাসভবনের বাগানে থাকা একটি দেয়ালের নিচে পুঁতে ফেলা হয়েছে বলে সন্দেহ করেছেন তুর্কি তদন্তকারীরা। অবশ্য গত অক্টোবরে যখন তারা বাসভবনটি তল্লাশি করেছিলেন, তখন সেখান থেকে কোনো কিছু পাওয়া যায়নি।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top