নান্দাইলে লাগামহীন নিত্যপণ্যের দাম : খেটে খাওয়া মানুষ দিশেহারা

নান্দাইল থেকে মোঃ ফজলুল হক ভুঁইয়া : য়মনসিংহের নান্দাইলে বিভিন্ন হাটবাজারে সব ধরনের শাকসবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ন আয় ও সাধারন খেটে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে বলে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের সাথে আলাপ করে এ তথ্য জানা গেছে।

নান্দাইলের বিভিন্ন হাটবাজারে পেঁয়াজ আলু ও শাক-সবজির বাজারদর কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না। বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে দিন দিন পাগলা ঘোড়ার গতিতে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার একদম বাইরে চলে যাচ্ছে। এ ছাড়া ভোজ্যতেল সয়াবিনের দাম প্রতি লিটারে ১০ টাকা বেড়েছে। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোকে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। আলুসহ সব ধরনের সবজির দাম উর্ধ্বগতি হওয়ায় নিম্ন আয় খেটে খাওয়া মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। নান্দাইল পৌর বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ছোট-বড় হাট বাজারে সবজির বাজারদর আকাশছোঁয়া। মানুষ বাজারে এসে সবজির দাম শুনে মাথায় হাত দিচ্ছেন।

একদম তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে হওয়ায় কোনো ভাবে ক্রয় করতে পারছেন না। এ ছাড়া রান্নার অপরিহার্য মসলা পেঁয়াজ ও রসুন আদা কাঁচা মরিচের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে ক্রেতারা নাভিশ্বাস উঠেছে।

নান্দাইল পৌরবাজার ও উপজেলার বিভিন্ন ছোট-বড় বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, গত কয়েক দিন ধরে পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ কয়েক দিন আগেও প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ২০ টাকা দামের প্রতি কেজি আলু ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। । শাকসবজির মধ্যে শিম প্রতি কেজি ১২০ টাকা, কাঁচামরিচ ২৪০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, , ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, টমেটো ১১০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, , , মুলার শাক প্রতি আঁটি ২৫ থেকে৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ দিকে ভোজ্যতেল সয়াবিনের দাম (বোতলজাত) প্রতি লিটারে ১০ টাকা বেড়েছে। তীর, ফ্রেশ ও রূপচাঁদা কোম্পানির সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১০ টাকা বেড়েছে। প্রতি লিটার ১ শ’ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ১১০ টাকা, দুই লিটার ২ শ’ টাকা থেকে বেড়ে ২১০ টাকা, তিন লিটার ৩ শ’ টাকা থেকে বেড়ে ৩২০ টাকা, পাঁচ লিটার ৫ শ’ টাকা থেকে বেড়ে ৫২০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। খোলা সুপার প্রতি লিটার তেল ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১ শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নান্দাইল পুরান বাজারের এক মুদিব্যবসায়ী বলেন, পেঁয়াজ সর্বনিম্ন ৫০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৬৫ টাকা বিক্রির দর সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু চৌরাস্তা আড়ত থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮২, ৮৩ ও ৭৮ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে আমাদের। যার ফলে ক্রেতাদের কাছে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮৫ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।

এব্যাপারে ভোক্তাদের অভিযোগ নান্দাইলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিং এর কোনো তৎপরতা চোঁখে পড়ে নি। নান্দাইলের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ইউএনও ও সহকারি কমিশনার(ভুমি) লাফিয়ে লাফিয়ে শাকসবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বাজার মনিটরিং এর কথা জানতে চাইলে তিনি উপযুক্ত কতৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া মিডিয়াতে কথা বলতে অক্ষমতা প্রকাশ করেন।

সরকারিভাবে আলুর দাম ৩০ টাকা নির্ধারন করলেও নান্দাইল সদরসহ বিভিন্ন হাট বাজারে, আলু ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। শাকসবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ও খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ সংসার চালাতে মারাত্বক চরম হিমশিম খেতে হচ্ছে। এতে এসব পরিবারের লোকজনের দেহে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিবে বলে সচেতন মহলের ধারনা।

ভূক্তভোগীদের মতে, বর্তমানে যে হারে কাপড়-চোপড় এবং চাল, ডাল আটা, পেঁয়াজ, মরিচ, আদা, রসুন ও আলু, বেগুন, পটোল শাকসবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়েছে তাতে সংসার চালাতে গিয়ে কম আয়ের সাধারণ মানুষ খেযে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন। ভোক্তাদের অভিযোগ একটি মহল সিন্ডিকেট করে আলুর দাম বাড়িয়েছে। নান্দাইলের সাধারন মানুষ টিসিবির পণ্য বিক্রির জোর দাবি জানিয়েছেন।

Share this post

scroll to top