স্বামীর বন্ধুর সাথে পরকীয়া : বিয়ে হলেও নতুন সংসার করা হলোনা ময়মনসিংহের রোকসানার

বন্ধুর বউয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে জাহিদ নামের এক যুবক। একপর্যায়ে বন্ধুর সঙ্গে স্ত্রীর বিবাহবিচ্ছেদও ঘটায় সে। তারপর বন্ধুর বউকে নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে মানিকগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতে থাকে ওই যুবক। ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া হালুয়াঘাট বাজারের সন্তোষপুর এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের মেয়ে রোকসানা আক্তার সাথীর সাথেই ঘটে এঘটনা।

কিছুদিন পর, মোবাইল ফোনে কথা বলাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সেই কারণেই জাহিদ কৌশলে তাকে ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর মানিকগঞ্জ জেলা শহরের বেউথা এলাকায় কালিগঙ্গা নদীতে প্রেমিকার মরদেহ ফেলে পালিয়ে যায়।

চলতি বছরের ৩১ মে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠায় মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি।

প্রথমে অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হলেও পরে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। কিছুদিন পরে শনাক্ত করা হয় ওই নারীর নাম পরিচয়। এরপর সেই নারীর মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পরিচালিত অভিযানে বেরিয়ে আসে হত্যার রহস্য।

আজ বুধবার বিকেলে মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার গ্রামের বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান রেখে ঢাকার সাভারের বিরুলিয়া এলাকায় বন্ধুর বউয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে মিজানুর রহমান ওরফে জাহিদ।

এরই একপর্যায়ে মুঠোফোনে কথা বলাকে কেন্দ্র করে সাথীর সঙ্গে ঝগড়া হয় জাহিদের। গেলো ৩০ মে সাথীকে নিয়ে মানিকগঞ্জ শহরের বেউথা এলাকার কালিগঙ্গা নদীতে বেড়াতে যায় জাহিদ। বেড়ানোর এক ফাঁকে সাথীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে লাশ নদীতে ডুবিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় জাহিদ।

সাথীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি জাহিদ তার স্ত্রীকে ব্যবহারের জন্য দেন। সেই মোবাইলের সূত্র ধরে ১২ অক্টোবর সাভারের বিরুলিয়া থেকে জাহিদকে গ্রেপ্তার করে সদর থানা পুলিশ। পরে ১৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জের বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে সাথীকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন জাহিদ।

তিনি আরও বলেন, ‘ক্রাইমপেট্রোল’ এর মতো টিভি সিরিয়াল দেখে সে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি লুকানোর উদ্দেশে অধিক সতর্কতার সঙ্গে হত্যা করে। হত্যার আগেই আসামি মিজানুর রহমান জাহিদ ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয় এবং হত্যাকাণ্ডের সময় যাতে কোনও দাগ না থাকে সেটি নিশ্চিত করে।

Share this post

scroll to top