নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গৃহবধু গণধর্ষণের মুল হোতা ও নির্দেশদাতা আমিন বাহিনীর প্রধান রুহুল আমিন কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত ২টায় উপজেলার নুরু পাটওয়ারীর হাট তাজুর বাড়ি থেকে চরজব্বার থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। এ দিকে ধর্ষণ ঘটনার মামলা প্রত্যাহারের হুমকি দিচ্ছে বনদস্যু সোহাগ বাহিনী তাজুল বাহিনী ও সেলিম। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন সিরাজ মিয়ার পরিবার।
এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী অভিযোগ করলে সোমবার লক্ষ্মীপুর থেকে আবদুল মান্নানের ছেলে ও আওয়ামী লীগকর্মী স্বপন (৩০) এবং মঙ্গলবার রাতে চরজুবলি ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামের আহাম্মদ উল্লাহর ছেলে বাদশা আলমকে (৩৫) গ্রেফতার করে পুলিশ।
এর পর বুধবার দুপুরে মামলার প্রধান আসামি একই গ্রামের ইসমাইলের ছেলে আওয়ামী লীগকর্মী মো: সোহেলকে (৩৫) কুমিল্লা জেলার অজ্ঞাত স্থান থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদিকে এ ঘটনা তদন্তে নোয়াখালীতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের দুটি তদন্ত দল বুধবার তদন্ত শুরু করে।
এ গণধর্ষণের খবর প্রকাশিত হওয়ায় প্রশাসনসহ সব মহলে তোলপাড় শুরু হয়।
এ দিকে আমিন বাহিনীর প্রধান রুহুল আমিন গ্রেফতার হওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে ।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো: সিরাজ উদ্দিনের স্ত্রী পারুল আক্তার ৩০ ডিসেম্বর ভোট দিতে গেলে রুহুল আমিন বাহিনীর সদস্যরা নৌকায় ভোট দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। পরে পারুল প্রকাশ্য ধানের শীষে ভোট দেন।
এ কারণে আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়। এর পর ওই দিন রাত ১১টার দিকে গৃহবধূর বাড়িতে প্রবেশ করে তারা তিনজনকে মারধর এবং বেঁধে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে। এর পর ঘটনাটি কাউকে না বলতে এবং মামলা না করতে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তারা পালিয়ে যায়।
এ সময় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা গৃহবধূর স্বামী, ছেলে ও মেয়েকে পিটিয়ে আহত করে। ঘটনার পর পরই গোপনে গৃহবধূ ও আহতদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনে বিএনপি প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহানের ধানের শীষ প্রতীকে রোববার সকাল ১০টায় ভোট দেন ওই গৃহবধূ।
ধর্ষকরা হল- একই গ্রামের মো. তোফায়েলের ছেলে আওয়ামী লীগকর্মী ও সন্ত্রাসী মোশাররফ হোসেন, ইসমাইলের ছেলে সোহেল, আবুল কাশেমের ছেলে বেছু, আবুল কালামের ছেলে সোহেল, আবদুল মন্নানের ছেলে স্বপন, ইউসুফের ছেলে আনোয়ার, নুরুল হকের ছেলে আমীর হোসেন, বাগন আলী ওরফে ইসমাইলের ছেলে মো. হানিফ, টোকাইর ছেলে সালাউদ্দিন, খোরশেদের ছেলে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রুহুল আমিন, আহমদ উল্লাহর ছেলে বাদশা।
এ ঘটনায় একই গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রুহুল আমিন, মোশাররফ হোসেন, বাদশা, সোহেল, হেঞ্জু, সোহেল, বেছু, জসিম, স্বপন, মো. হানিফ, আবুল, আনোয়ার, আমির হোসেনসহ ১২ জনকে আসামি করে গৃহবধূর স্বামী প্রথমে থানায় অভিযোগ এবং পরে মামলা করেন।
এদিকে গৃহবধূ, আহত স্বামী, ছেলে ও মেয়ের চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে যান বিএনপি প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান।