নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আলোচিত সেই গৃহবধু গণধর্ষণ ঘটনার ৩ আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার প্রধান আসামী মো: সোহেলকে বুধবার দুপুরে কুমিল্লার বরুরার মহেশপুর একটি ইটভাটা থেকে গ্রেফতার করেছে নোয়াখালী ডিবি পুলিশ। এরআগে মঙ্গলবার রাতে লক্ষীপুর জেলার রামগতি উপজেলা থেকে মামলার তিন নম্বর আসামী স্বপনকে(৩৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে চরজুবলী ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে। গত সোমবার মামলার ছয় নম্বর আসামী বাসুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ নিয়ে এজাহারভুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে বুধবার দুপুরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ৩ সদস্য একটি টীম ও বিকেলে চট্টগ্রাম পুলিশের ডিআইজি ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।
এঘটনার মূল হোতা আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক মেম্বার রুহুল আমিনকে আসামী না করায় বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালীর সুবর্নচর উপজেলার ৫ নং চরজুবলী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের চার সন্তানের জননী সেই নারী ভোট দিতে যায়। এ সময় ১০/১৫ জন তাকে ঘিরে ধরে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য। কিন্তু তিনি ধানের শীষ ভোট দেন। এ নিয়ে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়।
পরে ঐ দিন রাত ১২ টার দিকে তার বাড়ীতে কয়েকজন এসে বলেন আমরা পুলিশ দরজা খুলেন। গৃহবধুর স্বামী দরজা খুলে দিলে সন্ত্রাসী মোশারেফ পিতা তোফায়েল ওরফে তোফা, সালাউদ্দিন পিতা আলমগীর, সোহেল পিতা ইসমাইল, হেঞ্জু মাঝি পিতা চাঁন মিয়া, বেচু পিতা আবুল কাশেম, জসীম, সোহেল (২) পিতা আবুল কালাম, আবু, স্বপন পিতা আবদুল মান্নান, আনোয়ার পিতা ইউসুফ মাঝি, বাদশা আলম পিতা আহম্মদ উল্ল্যাহ, হানিফ পিতা ইসমাইল ওরফে বাগন আলী, সর্ব সাং মধ্যম বাগ্যা, ৪ নং ওয়ার্ড চরজুবলি ইউনিয়ন, আমির হোসেন পিতা নুর হক সাং পশ্চিম চর জব্বরসহ ১৫/১৬ জন সন্ত্রাসী গৃহবধুর স্বামী ও তার ছেলে মেয়েকে বেঁধে ফেলে। গৃহবধুকে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক ঘরের বাহিরে নিয়ে যায় এবং সকলে মিলে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও বেদম মারধর করে।এসময় গৃহবধুর স্বামী ও সন্তানদের মারধর করে সন্ত্রাসীরা।
এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা গৃহবধুর গলা কেটে হত্যার পরিকল্পনা করলে তিনি সন্ত্রাসীদের হাত পা ধরে কান্নাকাটি করে জীবন ভিক্ষা চান। ফলে সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা না করেই ভোর ৫টার দিকে পুকুর ঘাটে ফেলে যায়।
পরে সকালে তার স্বামী প্রতিবেশীদের সহায়তায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে গেলে স্থানীয় সন্ত্রাসী রহুল আমিন মেম্বার তাদের হুমকি দিয়ে বলেন, যদি ধর্ষণের ঘটনা সাংবাদিকরা বা অন্য কেউ জানে তবে পরিবাররের সবাইকে মেরে ফেলা হবে।
পরে স্থানীয় গ্রামবাসীর সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।