ভেঙে দেয়া হচ্ছে ঢাকাসহ ১১ মহানগর কমিটি

মহানগর শাখাগুলো ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। এজন্য ঢাকাসহ ১১টি মহানগর কমিটি ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। শিগগিরই প্রতিটি মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি করা হবে। তারা বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা কমিটি সম্পন্ন করবে। এরপর কাউন্সিলের মাধ্যমে মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে। শাখাগুলোকে শক্তিশালী করতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

পুনর্গঠন কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক নেতা বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর দিয়ে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরপর বরিশাল মহানগর। এভাবেই খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আহ্বায়ক কমিটি হবে। কুমিল্লা মহানগরে কোনো কমিটি নেই। সেখানে প্রথমবারের মতো নতুন কমিটি গঠন করা হবে।

জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, মহানগর কমিটি যেগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে, সেগুলো অবশ্যই পুনর্গঠন হবে। আর পুনর্গঠন তো একটি চলমান পক্রিয়া।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চট্টগ্রামের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। নেতাদের সবাই বর্তমান কমিটি ভেঙে দিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির পক্ষে মত দিয়েছেন। এখন আমরা দলের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।

সূত্র জানায়, মেয়াদোত্তীর্ণ মহানগর কমিটি ভেঙে নতুন করে কমিটি গঠনে এর আগেও কয়েকবার উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু অধিকাংশ মহানগরে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা শীর্ষ পদে থাকায় তা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এসব কমিটি ভেঙে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। সে অনুযায়ী কাজও শুরু করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

জানা যায়, গাজীপুর মহানগর বাদে সব মহানগর কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা বিএনপির কমিটি হয়। ২০১৬ সালের ৬ আগস্ট শাহাদাত হোসেনকে সভাপতি ও আবুল হাসেম বকরকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম মহানগর, ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলনকে সাধারণ সম্পাদক করে রাজশাহী মহানগর, ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নাসিম হোসেনকে সভাপতি ও বদরুজ্জামান সেলিমকে সাধারণ সম্পাদক করে সিলেট মহানগরের কমিটি হয়। ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলামকে আহবায়ক এবং আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ ও অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলীসহ ১০ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৬০ সদস্যবিশিষ্ট ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির কমিটি অনুমোদন করা হয়। ২০১৩ সালের অক্টোবরে মুজিবর রহমান সরোয়ারকে সভাপতি ও কামরুল আহসান শাহিনকে সাধারণ সম্পাদক করে বরিশাল মহানগর কমিটি গঠন করা হয়। ২০১৪ সালে সাধারণ সম্পাদক কামরুল আহসান শাহিন মারা গেলে দলের ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিন সিকদারকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। এছাড়া ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে সভাপতি ও মনিরুজ্জামান মনিকে সাধারণ সম্পাদক করে খুলনা মহানগর, ২০১৭ সালের ২৬ মে রংপুর মহানগর এবং ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটি গঠন করা হয়।

বিএনপির পুনর্গঠন কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক নেতা জানান, মহানগরের মধ্যে গাজীপুরের কমিটির মেয়াদ এখনও আছে। এই মহানগরের শীর্ষ নেতারা সাংগঠনিকভাবে অনেক ভালো কাজ করছেন। থানাগুলোয় কাউন্সিল করে কমিটি দিয়েছেন। ৫৭টি ওয়ার্ডেরও কমিটি করেছেন। তাই নেতাদের প্রতি সন্তুষ্ট বিএনপি হাইকমান্ড। তাই এখনই গাজীপুর মহানগর নিয়ে কিছু ভাবা হচ্ছে না।

সূত্র জানায়, পুনর্গঠন নিয়ে মহানগরের নেতাদের নিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়াল বৈঠক শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরের নেতা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠক করেছেন। যেখানে স্কাইপেতে যুক্ত হন তিনি। এছাড়া বরিশাল বিভাগ পুনর্গঠনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। পর্যায়ক্রমে বাকি মহানগর নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন তিনি।

Share this post

scroll to top