মেলান্দহ হাসপাতালের বহুল আলোচিত নারী চিকিৎসক সুলতানা পারভীনের মৃত্যুর ঘটনায় অপর চিকিৎসক শাহাদাৎ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শাহাদাৎ হোসেন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ডাক্তার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে জামালপুর কোর্টে পাঠানো হয়েছে।
মেলান্দহ থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম খান জানান, তদন্তচলাকালে সন্দেহভাজন হিসেবে ডাক্তার শাহাদাৎ হোসেনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরদিন ১০ অক্টোবর তাকে কোর্টে চালান দেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্য যাচাইবাছাই করা হচ্ছে। অচিরেই ডাক্তার সুলতানা পারভীনের মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন হবে। শাহাদাৎ একসময় ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন, এখন মনে হয় না।
এব্যাপারে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-
উল্লেখ্য, গত ১৬ আগস্ট সন্ধ্যার দিকে মেলান্দহ হাসপাতালের কোয়ার্টার থেকে গাইনি ডাক্তার সুলতানা পারভীনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ২২ আগস্ট ডাক্তার সুলতানা পারভীনের ভগ্নিপতি আসাদুল হাফিজ চৌধুরী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
ডাক্তার শাহাদাৎ হোসেনের জন্মস্থান মেলান্দহ উপজেলার আদ্রা গ্রামে। তার বাবা ফজলুল হক এবং মা সুরাইয়া বেগম আলো উভয়ই মেলান্দহ ফ্যামিলি প্ল্যানিংয়ের ভিজিটর ছিলেন। মেলান্দহ পৌরসভার আদিপৈত এলাকায় তাদের বাসাবাড়িও আছে। শাহাদাৎ হোসেন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ডাক্তার হিসেবে কর্মরত আছেন। জামালপুরের মানবসেবা হাসপাতালসহ বেশকিছু বেসরকারি হাসপাতালে তিনি প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন।জামালপুর শহরের শহীদ হারুন সড়কের ভাড়াটে বাসায় থাকতেন। শাহাদাৎ হোসেন বিয়ে করেন ঢাকার বিক্রমপুরের মেয়ে ডা. খুশওয়াতুল জাহানকে। খুশওয়াতুল জাহান আনোয়ারা মডেল থানা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে কর্মরত আছেন। তাদের ঘরে ২ ছেলে ১ মেয়ে আছে। ডাক্তার শাহাদাৎ হোসেনের বাবা ফজলুল হকের দাবি ডা. সুলতানা পারভীনের মৃত্যুর পেছনে তাঁর ছেলের কোন সম্পৃক্ততা নেই। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে।
এদিকে নিহত গাইনি ডাক্তার সুলতানা পারভীনের পরিবার থেকে জানানো হয়েছে, ডাক্তার শাহাদাত হোসেনকে আটক করা হলেও আমাদের কিছু জানায়নি পুলিশ। আমরা ভিন্ন মাধ্যমে এ খবর পেয়েছি।
সুলতানা পারভীনের পিতা মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আজাদ জানান, আমার নিহত মেয়ে মৃত্যুর আগে তার মাকে জানিয়েছিল যে, জামালপুরে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী ও কিছু শত্রু তৈরি হয়েছে। তারা আমার জন্য হুমকিস্বরূপ। সম্ভবত পেশাগত দ্বন্দ্বেই আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আমার মেয়ের মোবাইলে ডাক্তার শাহাদাত হোসেনের কথপোকথন ও মেসেজ রেকর্ড আছে।
নিহত ডাক্তারের পিতা আরও বলেন, মামলার স্বার্থে ওই ডাক্তারকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে আমার ধারণা। আমি আমার মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।