মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে এক নববধূকে ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অপর ঘটনায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শ্রীনগর উপজেলার পশ্চিম কোলাপাড়া গ্রামে স্বামীর সহযোগিতায় এক গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রায় তিন মাস আগে উপজেলার কোলাপাড়া গ্রামের মৃত বাছের শেখের ছেলে আজিজুলের সাথে বিয়ে হয় একই উপজেলার শ্যামসিদ্ধি গ্রামের ওই নারীর। স্বামী আজিজুলের শারীরিক অক্ষমতার কারণে বিয়ের পর থেকে এ পর্যন্ত তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো দৈহিক ও শারীরিক সম্পর্ক হয়নি।
এক পর্যায়ে স্বামীর শারীরিক অক্ষমতার কারণে সংসার না করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিয়ের সময় দেয়া যৌতুকের টাকা ও অন্যান্য উপঢৌকন ফিরিয়ে দিতে বলেন ওই নারী। স্বামী আজিজুল যৌতুক ফিরিয়ে না দেয়া ও তার শারীরিক অক্ষমতা বাইরে যাতে প্রকাশ না হয় সে বিষয়ে ভিন্ন কৌশলের পরামর্শ নেন তার আপন মামা সিদ্দিকের কাছে।
সিদ্দিকের পরামর্শ অনুযায়ী আজিজুল তার আপন খালা ও খালাতো ভাই নুরুল ইসলামকে কোলাপাড়ায় তার নিজ বাড়ির একটি ঘরে রাত্রি যাপন করান। এক পর্যায়ে রাত ১০টার দিকে নুরুল ইসলামের মা মাথা ব্যাথার মলম নেওয়ার কৌশলে ঘুমন্ত আজিজুল ও তার স্ত্রীকে ঘরের দরজা খুলতে বলে।
পরামর্শ ও পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আজিজুল তার নিজের ঘরের দরজা খুলে দেয়। ঘরের ভিতর ঢুকে নুরুল ইসলামের মা, নুরুল ইসলাম ও আজিজুল সবাই মিলে ওই নারীকে হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং মুখে কাপড় গুঁজে দেয়। এরপর নুরুল ইসলাম, ধর্ষিতার স্বামী আজিজুল ও নুরুল ইসলামের মা ব্লেড দিয়ে ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন অংশের কাপড় কেটে তাকে উলঙ্গ করে ফেলে। এর পর নুরুল ইসলাম হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় ধর্ষিতার স্বামী আজিজুল এই ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও করতে থাকে।
অপরদিকে একই রাতে উপজেলার কোলাপাড়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ পাইকসা গ্রামের এক স্কুলছাত্রী রাত পৌনে ১২টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হলে একই গ্রামের মাজেদ শেখের বখাটে ছেলে রাকিব হাসান (২৫) ঘরে ঢুকে লুকিয়ে থাকে। পরে কোলাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় স্কুলছাত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে ধর্ষক রাকিব হাসানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: ইউনুচ আলী জানান, দুটি ঘটনায়ই আলাদা আলাদা ভাবে দুটি মামলা হয়েছে। ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য স্কুলছাত্রীকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে আর নববধূকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। গৃহবধূর স্বামী ও স্কুলছাত্রীর ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। নববধূর ধর্ষককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।