ক্রিকেট ক্যারিয়ারে অনেকবারই বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান। শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে শাস্তিও পেয়েছেন একাধিকবার। সর্বশেষ পাওয়া নিষেধাজ্ঞার শাস্তি এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন। খারাপ সময় পেছনে ফেলে নতুন বছরে নতুন করে শুরু করতে চান সাব্বির।
গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দ্বিতীয় ওয়ানডের পর ফেসবুকে এক সমর্থককে গালিগালাজ ও মারধরের হুমকি দেয়ার অভিযোগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ হন সাব্বির। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয় সেপ্টেম্বর থেকে। এর আগে জাতীয় ক্রিকেট লিগে দর্শক পিটিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা ও বিশ লাখ টাকা জরিমানা গুনেছিলেন। বাদ পড়েছিলেন বোর্ডেও কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকেও। ২০১৬ বিপিএলেও শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বড় অঙ্কের আর্থিক জরিমানা করা হয়েছিল তাকে। আরেকটি বিপিএল সন্নিকটেই। সাব্বিরও প্রস্তুত হচ্ছেন। মিরপুরে গতকাল অনুশীলনের এক ফাঁকে নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে বলেন, ‘মানসিকভাবে খুব কঠিন সময় পার করেছি। এই সময়টায় এনসিএল খেলেছি, বিসিএল খেলেছি। অনুশীলন করেছি। বাসায় ছিলাম পরিবারের সাথে। নিষেধাজ্ঞার পাঁচ মাস কেটেছে, আর এক মাস বাকি। দেখা যাক এবার বিপিএলটা কী হয়।’
নিষিদ্ধ হওয়ার আগে জাতীয় দলে পারফরম্যান্স ভালো ছিল না সাব্বিরের। বিতর্কিত ঘটনাগুলোই তার পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে কিনা জানতে চাইলে সাব্বির বলেন, ‘আমার কাছে তেমন প্রভাব পড়েছে বলে মনে হয় না। পারফরম্যান্স তো সব সময় আসবে না। আপনি চাইলেই ১০০ মারবেন এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে নিজেকে প্রস্তুত করছি। বারবার একই ভুলে ক্যারিয়ার হুমকিতে পড়ে গেছে। কাল রাতে প্রতিজ্ঞা করেছি, ২০১৮ সাল অনেক খারাপ কেটেছে। আজ (গতকাল) নতুন বছরের প্রথম দিন, সামনে তাকিয়ে আছি।’
আপাতত সাব্বিরের ভাবনাজুড়ে শুধুই বিপিএল। এখানে ভালো করে জাতীয় দলে জায়গা ফিরে পেতে চান তিনি, ‘জাতীয় দল সবার জন্যই খোলা আছে। বিপিএলটা আমার জন্য অনেক বড় জায়গা। আমার জীবনে অনেক বড় টুর্নামেন্ট। ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করব আমার ন্যাচারাল ক্রিকেটটা খেলার জন্য। আর বিশ্বকাপ অনেক দূরে বলে তা নিয়ে ভাবছি না। বিপিএলে ভালো পারফর্ম করলে জাতীয় দলে জায়গা ফিরে পাওয়ার সুযোগ থাকবে।’
প্রথমবারের মতো বিপিএলে সিলেট সিক্সার্সের হয়ে খেলবেন ডেভিড ওয়ার্নার। অস্ট্রেলিয়ান এই ব্যাটসম্যানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারলে সিলেট ভালো কিছু করতে পারবে বলে মনে করেন সাব্বির রহমান। অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের পাশাপাশি বিগ ব্যাশ, সিপিএল, আইপিএলের মতো বিশ্বের বড় বড় টি-২০ টুর্নামেন্টে খেলার অভিজ্ঞতা আছে ওয়ার্নারের। আইপিএলে তার অধীনে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ২০১৬ সালে। বিপিএলে সিলেটের নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে তার কাঁধেই।
সাব্বিরের কথায়, ‘অবশ্যই সে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বড় মাপের খেলোয়াড়। ওর অভিজ্ঞতা যদি আমাদের মধ্যে শেয়ার করে, আমরা যদি ওকে অনুসরণ করি, আমরা যদি বাকি ১০ জন সাপোর্ট করতে পারি, তাহলে ভালো কিছু হবে। শেখার জন্য ওয়ার্নারকে জিজ্ঞেস করার কিছু নেই। ও কিভাবে থাকে, কিভাবে খেলে, ওর সাথে থাকতে থাকতে খেলতে খেলতে অনেক কিছু শেখা যাবে। ওকে প্রশ্ন করে তো সব উত্তর পাওয়া যাবে না।’
গত বিপিএলে সিলেট সাত দলের মধ্যে পাঁচে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করেছিল। এবার ভালো সম্ভাবনা দেখছেন সাব্বির। ‘গতবার আমরা ভালো শুরু করেছিলাম। এবার টিম কম্বিনেশন অবশ্যই অনেক ভালো। টপ অর্ডার, মিডল অর্ডারও ভালো। এখন মাঠে খেলতে হবে। টি-২০ ম্যাচে বড় ছোট কোনো দল নেই। যে ১২০টা বল ভালো খেলবে, তারাই জিতবে।’