জামালপুরে শিশু নির্যাতনকারী দুই আসামির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট

জামালপুরে সুপারি চুরির মিথ্যা অভিযোগে খেলার মাঠ থেকে ধরে নিয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ও শিশুনাট্যশিল্পী সাজ্জাদ হোসেনকে (১১) নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে শিশুটির বাবা আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে জামালপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের জামালপুর সদর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

গতকাল সোমবার দুপুরে জামালপুর শহরের লাঙ্গলজোড়া গ্রামের দরিদ্র কাঠমিস্ত্রি আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে শিশুনাট্যশিল্পী সাজ্জাদ হোসেনের ওপর নির্মম নির্যাতন করে তাকে হত্যার চেষ্টা চালান একই গ্রামের সোহাগ খান (৪২) ও তার ছেলে নিহাল খান (১৯)। আজ মঙ্গলবার সকালে নির্যাতনকারী পিতা-পুত্রকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন শিশুটির পিতা আব্দুল কুদ্দুস। ওই আদালতের বিচারক প্রথম শ্রেণির হাকিম মো. নাজমুল হক বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলাটির দুই আসামি শিশু নির্যাতনকারী সোহাগ খান ও তার ছেলে নিহাল খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, গতকাল সোমবার সকালের দিকে জামালপুর পৌরসভার লাঙ্গলজোড়া পূর্বপাড়া এলাকার শাহজাহান খানের ছেলে সোহাগ খানের বাড়ির সুপারি গাছ থেকে কিছু সুপারি চুরি হয়। সোহাগ খানের সন্দেহের দৃষ্টি পড়ে প্রতিবেশী দরিদ্র কাঠমিস্ত্রি আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সাজ্জাদ হোসেনের প্রতি। শিশুনাট্যশিল্পী হিসেবেও এলাকায় এবং জেলার বিভিন্ন মহলে বেশ পরিচিতি রয়েছে সাজ্জাদের। ওই দিন দুপুর দেড়টার দিকে সহপাঠীদের সাথে স্থানীয় লাঙ্গলজোড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খেলাধুলা করছিল সাজ্জাদ। এ সময় সোহাগ খান তার ছেলে নিহাল খানকে দিয়ে ওই মাঠ থেকে সাজ্জাদকে ধরে বাড়ির পেছনে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করেন।

সুপারি চুরির অভিযোগ তুলে শিশু সাজ্জাদের দুই হাত বেঁধে মারধর করেন সোহাগ খান। একপর্যায়ে সাজ্জাদের গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। এতে তার গলায় ও ঘাড়ের দুই পাশে জখম হয়ে গেছে। ধারালো ছুরি দিয়েও সাজ্জাদের ঘাড়ের দুই পাশে আঘাত করে। কিলঘুষির আঘাতে সাজ্জাদের মাথার কিছু অংশ ফুলে গেছে। নির্যাতন সইতে না পেরে সাজ্জাদ অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। খবর পেয়ে সেখান থেকে সাজ্জাদকে উদ্ধার করে জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা। শিশুটি বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন।

শিশুটির পিতা আব্দুল কুদ্দুসের দাবি, ঘটনার দিন সোহাগ খানের বাড়ির সুপারি গাছ থেকে সুপারি চুরির ঘটনার সাথে তার ছেলে সাজ্জাদ জড়িত ছিল না। সুপারি চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিনা অপরাধে সাজ্জাদকে ধরে নিয়ে তাকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যার চেষ্টা করেছে তারা।

নির্মম এই শিশু নির্যাতনের ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শিশুটির পরিবার ও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মামলাটির দুই আসামিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

মামলাটির বাদী পক্ষের আইনজীবী এস এম কামরুল হাসান পলাশ জানান, জামালপুর সদর আমলি আদালতের বিচারক প্রথম শ্রেণির হাকিম মো. নাজমুল হক বাদীর অভিযোগ গ্রহণ করে তা আমলে নিয়ে দুই আসামি সোহাগ খান ও তার ছেলে নিহাল খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

Share this post

scroll to top