নোয়াখালীতে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে পাশবিক নির্যাতন এবং সিলেটে এমসি কলেজে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দ্বারা গৃহবধূকে নির্যাতনে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ময়মনসিংহে বিক্ষোভ ও মানব্বন্ধন করেছে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি ময়মনসিংহ নারী শাখা, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর গাঙ্গিনাপাড় শহীদ ফিরোজ-জাহাঙ্গীর চত্বরে এ মানব্বন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এদিকে মানব্বন্ধনের খবর পেয়ে আগে থেকেই কোতুয়ালী মডেল থানার পুলিশের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন।
এ সময় মানব্বন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ময়মনসিংহ জেলা শাখার প্রধান উপদেষ্টা আবুল বাশার, ঝুনু রঞ্জন দাস, সাজ্জাদুল সজীব, হারুন উর রশিদ প্রমুখ। মানব্বন্ধন চলাকালে নেতাকর্মীরা ধর্ষণকারীদের কঠোর সমালোচনা করেন। সেই সাথে সরকারকে কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে ধর্ষণ ও নারী হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে এদিন সকাল ১১ টার দিকে নগরীর ফিরোজ-জাহাঙ্গীর চত্বরে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ময়মনসিংহ জেলা শাখার উদ্যোগে নোয়াখালীতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে পাশবিক নির্যাতন, সিলেটে এমসি কলেজে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দ্বারা গৃহবধূ ধর্ষণসহ সারাদেশে অব্যাহত নারী নির্যাতনে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নারী পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি মাহমুদা ফেরদৌস হেলেন, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমদাদুল হক মিল্লাত, নারী শাখার সদস্য মরিয়ম বেগম, নারীমুক্তি কেন্দ্র জেলা আহবায়ক বনানী রায়, সঞ্চালনা করেন ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হাসান। এ সময় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা সমন্বয়ক শেখর রায়, ব্রহ্মপুত্র বাঁচাও আন্দোলনের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ, কবি শামীম আশরাফ, সংগীতশিল্পী নাসিমা আক্তার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অজিত দাস, বাকৃবি সভাপতি গৌতম কর, সদস্য রিফা সাজিদা, আনন্দমোহন কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘সারাদেশে নারী ধর্ষণ নির্যাতনের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। প্রত্যেক পাড়া মহল্লায় মাদকসেবি, মাস্তান, চাঁদাবাজরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের ছত্রছায়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠছে। প্রায় প্রত্যেকটা ঘটনার সাথে এই সন্ত্রাসীরা যুক্ত। নোয়াখালী, এমসি কলেজের ঘটনায় সরাসরি ক্ষমতাসীন দলের পদধারী সন্ত্রাসীরা যুক্ত। ক্ষমতার দাপটে এই সন্ত্রাসীদের বিচার না করায় তারা আরও উন্মত্ত হয়ে উঠেছে। ’
‘একদিকে বিচারহীনতা অন্যদিকে মাদক, পর্ণোগ্রাফি, নারীর প্রতি কূপমন্ডুক দৃষ্টিভঙ্গি সমাজে নারী নির্যাতনের ক্ষেত্র তৈরি করেছে। এ অবস্থায় প্রত্যেক পাড়া মহল্লায় নারী নির্যাতক, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ পথেই সরকারকে বাধ্য করতে হবে ধর্ষক নিপীড়কদের বিচার করতে।’