ক্ষুধার্ত মানুষের মুখের গ্রাস চুরি

ইয়েমেনে ক্ষুধার্ত মানুষের মুখের গ্রাস চুরি করছে দেশটির ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হাউছি বিদ্রোহীরা। সোমবার জাতিসঙ্ঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) পক্ষ থেকে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তোলা হয়েছে। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলে বলেন, তার সংস্থার হাতে এ সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।

ডেভিড বিসলে বলেন, দুনিয়ার সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সঙ্কটে নিমজ্জিত মানুষকে সহায়তার জন্য পাঠানো খাদ্যসামগ্রী সরিয়ে ফেলে হাউছিরা। এ ধরনের নিকৃষ্ট কর্মকাণ্ড থামাতে হাউছিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ডব্লিউএফপি। সংস্থাটির জরিপে দেখা গেছে, ইয়েমেনের রাজধানী সানার বাসিন্দারা ত্রাণ হিসেবে জাতিসঙ্ঘের পাঠানো খাদ্যসামগ্রী পায়নি। অথচ তাদের জন্যই এ সহায়তা পাঠানো হয়েছিল। কেননা সেখানকার ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা অপরিহার্য।

ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, জাতিসঙ্ঘের পাঠানো খাদ্যসামগ্রী ক্ষুধার্ত মানুষের মধ্যে বণ্টনের বদলে উল্টো তা নিয়ে ব্যবসা করেছে হুথিরা। তারা এসব খাবার খোলাবাজারে বিক্রি করেছে। হাউছিদের পক্ষ থেকে অবশ্য ডব্লিউএফপির অভিযোগ নাকচ করে দেয়া হয়েছে।

২০১৫ সালে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে উচ্ছেদ করে রাজধানী দখলে নেয় ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হাউছি বিদ্রোহীরা। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন হাদি। হাউছিদের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই হাদির অনুগত সেনাবাহিনীর একাংশ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। ২০১৫ সালের মার্চে হাউছি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিত্রদের নিয়ে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

সৌদি জোটের অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম জানায়, যুদ্ধের কারণে ইয়েমেনে গড়ে প্রতি তিন ঘণ্টায় একজন মানুষের মৃৃত্যু হয়। এই ভয়াবহ পরিসংখ্যান তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ অন্য ইউরোপীয় দেশগুলোকে ইয়েমেনে অভিযান চালানো সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের আহ্বান জানায় সংস্থাটি।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top