তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনি ফলাফল অনুযায়ী দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। কাজেই আগামী সংসদে জাতীয় পার্টিই বিরোধী দলের আসনে বসবে। প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে সরকারের কাজে ভূমিকা রাখার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। তারা যদি আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন তাহলে তারা সরকারেও থাকবে। নতুবা তারা বিরোধী দলেই থাকবে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (ডিএসআরএস) সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী কার্যকরী ও দক্ষ নেতাদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করবেন, এটি তার নিজস্ব এখতিয়ার। তিনি বলেন, আগামী সরকারের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, দুর্নীতি-বৈষম্য দূর করা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।
ইনু বলেন, দেশে ৭০ সালের নির্বাচন মুসলিম লীগের পতনের সূচনা করেছিল। আর ২০১৮ সালের নির্বাচন বিএনপি-জামাত ও জঙ্গিবাদের রাজনীতির পতনের সূচনা করবে। তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের কওে দেওয়ার যে অভিযোগ বিএনপি করেছে তা ভিত্তিহীন। নির্বাচনি আইন অনুসাওে কোনও এজেন্টকে যদি ভোটকেন্দ্র থেকে বের কওে দেওয়া হয় তাহলে তাকে প্রিজাইডিং অফিসারকে লিখিত অভিযোগ দিয়ে বের হতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রের কোনও কেন্দ্রেই এমন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বিএনপি হেরেছে তাদের আয়েশি মনোভাব, মনোনয়ন বাণিজ্য, আর তারা মাঠে ছিল না তাই।
ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্য নতুন ওয়েজবোর্ড
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের কর্মীদের জন্য নতুন ওয়েজবোর্ড করা হবে। সংবাদপত্রের জন্য গঠিত নবম ওয়েজবোর্ডের প্রতিবেদনে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্য আলাদা ওয়েজবোর্ড করার সুপারিশ রয়েছে। ইনু বলেন, ওটা দেওয়ার জন্য প্রাথমিক প্রশাসনিক কাজটা সম্পন্ন হলে নতুন সরকার এবং তথ্য মন্ত্রণালয় এটা সম্পন্ন করবে। সুতরাং নতুন বছরে আমি আশা করছি ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মীদের জন্য নতুন ওয়েজবোর্ড হবে।
সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদেও বেতন বাড়াতে নবম মজুরি বোর্ড যে সুপারিশ করেছে তা পর্যালোচনায় গত ৩ ডিসেম্বর মন্ত্রীকে প্রধান করে একটি কমিটি কওে দেয় মন্ত্রিসভা। ওই কমিটিতে শিল্পমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী এবং শ্রমমন্ত্রীকে রাখা হয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয় কমিটিতে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মন্ত্রিদের নিয়ে গঠিত ওই উপ-কমিটির একটি সভাও হয়েছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।
এরআগে গত ২৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হককে প্রধান করে ১৩ সদস্যের নবম ওয়েজবোর্ড গঠন করে সরকার। নবম ওয়েজবোর্ডকে নতুন বেতন কাঠামোর বিষয়ে সরকারকে সুপারিশ দিতে ছয় মাস অর্থাৎ গত ২৯ জুলাই পর্যন্ত সময় দেওয়া হলেও পওে বোর্ডের মেয়াদ তিন মাস বাড়ানো হয়। পওে গত ১১ সেপ্টেম্বর সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা কওে সরকার।
প্রসঙ্গত. ২০১৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকদের মূল বেতন ৭৫ শতাংশ বাড়িয়ে অষ্টম মজুরি কাঠামো ঘোষণা করে সরকার, যা ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বও থেকে কার্যকর ধরা হয়।