সৌদি আরবে থাকা ৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে সেই দেশের সরকার। এই রোহিঙ্গারা ৩০-৪০ বছর ধরে সৌদি আরবে অবস্থান করছে। রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট না দিলে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর হুমকিও দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, সৌদি আরবের তৎকালীন বাদশা স্বপ্রণোদিত হয়ে এবং রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখে ৮০ ও ৯০-এর দশকে অনেক রোহিঙ্গাকে নিয়ে গেছেন। অনেকে সরাসরি গেছে। কেউ কেউ হয়তো বাংলাদেশ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, এটি আমরা পুরোপুরি জানি না।
তিনি বলেন, এখন তারা (সৌদি) বলছে ৫৪ হাজার রোহিঙ্গা সেখানে আছে। তারা বলছে, এদের কোনো পাসপোর্ট নেই এবং কোনো কাগজ নেই। তারা আরও বলছে, এদের তোমরা পাসপোর্ট ইস্যু কর। আমরা বলেছি, যারা আগে পাসপোর্ট পেয়েছে এবং তাদের পাসপোর্টের কাগজ যদি থাকে তবে আমরা নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করব। কিন্তু এরা যদি আমাদের লোক না হয়, তবে আমরা নেব না।
বুধবার আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক বৈঠক শেষে নিজ কার্যালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের নাগরিক না হওয়ার পরেও কীভাবে সৌদি আরব পাসপোর্ট ইস্যু করতে বলে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সেটা আমি কী করব, এটা মুশকিল।
রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট না দিলে অন্য বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো হবে বলে হুমকি দেয়া হচ্ছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, জুনিয়র লেভেলে কেউ কেউ বলছে তোমরা যদি এদের না নাও বা পাসপোর্ট ইস্যু না কর তবে তোমাদের দেশ থেকে এত লোক আনছি, এটা আমরা বন্ধ করে দেব এবং তোমাদের যে ২২ লাখ লোক আছে তাদের সম্পর্কে নেতিবাচক অবস্থান নেব। এই কথাগুলো জুনিয়র লেভেল থেকে আমাদের বলা হয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয় এটি টিকবে না।
পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি বিষয়টি দেখছেন জানিয়ে আবদুল মোমেন বলেন, কিন্তু সৌদি আরবের কিছুটা তাগাদা আছে। তারা বলছে, নাগরিকত্বহীন কোনো ব্যক্তি তারা রাখবে না। তারা বলছে, তোমরা এটি তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা কর। আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রায়ই তারা এ প্রশ্নটা তোলে।
এদিকে সৌদি আরবে ফেরত যেতে প্রত্যাশী আন্দোলনরত প্রবাসীদের বিশৃঙ্খলা না করার পরিবর্তে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। সমস্যাটি সমাধানে আমরা আন্তরিকভাবে এবং সবাই মিলে কাজ করছি।