ডাকসু ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, আমি মনে করি মামলাটি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে করা। আর মেয়েটির বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী।। মেয়েটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একজন নেতা মেয়েটিকে টাকা পয়সা দিয়ে মামলা করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। যিনি মামলা করেছেন তার সঙ্গে আমার কোনদিন দেখা হয়নি। দুই মাস আগে আমাকে ফোন দিয়ে সহযোগিতা চেয়েছেন যে কোন এক ছেলের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল, যেটি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। সে জন্য আমাকে ভূমিকা রাখতে বলা হয়। এরপর ফোন দেবে বলে আর কোন যোগাযোগ করেননি।
নূর বলেন, মামলার বাদী এক সময়ে ওই ছেলেটির পরিচয় দেয় আমাকে এবং বলে আমরা যেন ছেলেটিকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করি। কিন্তু আমি খোঁজ নিয়ে জানি ছেলেটির নাম নাজমুল সে আমাদের সংগঠনের কোন দায়িত্বে নেই। তবে সে আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকতো। তাই আমি অভিযোগকারীকে বলেছি সেতো আমাদের সংগঠনের কেউ না, পদেও নেই।
এরপর মেয়েটি বলে নজমুলসহ আরো একজনকে বহিষ্কার করতে হবে যে হচ্ছে আমাদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। কিন্তু আমি তাকে বলি সে তো আমাদের আহ্বায়ক। আমি আহ্বায়ককে কিভাবে বহিষ্কার করবো। আপনার সমস্যা মনে হলে আমি আইনগত সহযোগিতা করবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলে অভিযোগে সহযোগিতা করবো। কিন্তু শেষে তিনি আর যোগাযোগ রাখেননি।
মামলার এজাহারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী হাসান আল মামুনের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ এবং পরে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ার অভিযোগ আনেন। নুরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মিমাংসা করার নামে তাঁকে (ছাত্রীকে) নীলক্ষেতে ডেকে নিয়ে শাসিয়েছেন। তিনি (নুরুল) বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তাঁদের ভক্তদের দিয়ে তাঁর নামে ‘উল্টাপাল্টা’ পোস্ট করাবেন এবং ‘যৌনকর্মী’ বলে প্রচার করাবেন। তাঁদের গ্রুপের সদস্য সংখ্যা এক কোটি ২০ লাখ। এতে তাঁর সম্মানহানি হবে।
এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন—ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক মো সাইফুল ইসলাম, সহ–সভাপতি মো. নাজমুল হুদা, শিক্ষার্থী মো আবদুল্লাহ হিল বাকী।
মামলার এজাহারে অভিযোগকারী বলেন, হাসান আল মামুন তাঁরই বিভাগে ওপরের ক্লাসে পড়তেন। বছর দুয়েক আগে তাঁদের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। তাঁরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন। সে সময়ই হাসান আল মামুন শারীরিক সম্পর্কের ইঙ্গিত দিতেন। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি হাসান তাঁকে তাঁর পুরানঢাকার নবাবগঞ্জের বাসায় ডেকে নিয়ে যান এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ করেন। পরদিন অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিযোগকারী ছাত্রী। পরে মামলার দুই নম্বর আসামি যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হকের সহযোগিতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সে সময় ছাত্রীটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু হাসান আল মামুনের বাধায় তিনি যোগাযোগ করতে পারেননি। ওই সময় তিনি বিয়ের জন্য চাপ দিলে হাসান আল মামুন রাজি হন। পরে পিছিয়ে যান।
বিজ্ঞাপন
গত ২০ জুন ওই ছাত্রী নুরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নূরল তাঁকে মীমাংসা করে দেবেন বলে ২৪ জুন নীলক্ষেতে ডেকে নিয়ে যান এবং মীমাংসার দিকে না গিয়ে ‘বাড়াবাড়ি’ করতে নিষেধ করেন।
এরপরই ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম অভিযোগকারী নারীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর কাজে পরিষদের সহসভাপতি মো নাজমুল হুদা ও মো আবদুল্লাহ হিল বাকীকে লাগান। তারা বিভিন্ন চ্যাটগ্রুপে তাঁর (অভিযোগকারী নারীর) নামে তাঁর চরিত্র নিয়ে কথা বলেন এবং এতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।