করোনার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতে প্রাথমিক স্তরের প্রায় দেড় কোটি শিক্ষার্থীর পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটছে। শিক্ষার্থীদের এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ৩ দফা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার।
পরিকল্পনার প্রথম ধাপ অনুযায়ী—৪ অক্টোবর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে ৭৬ দিনের মধ্যে পাঠ সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। এজন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাসও তৈরি করা হয়েছে। এই সিলেবাস অনুযায়ী শিক্ষাদের পাঠ শেষ করে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণের জন্য মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে, কোন প্রক্রিয়ায় এই মূল্যায়ন হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
সরকারের পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে বলা হয়েছে, ৪ অক্টোবর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে না পারলে নভেম্বরের ১ তারিখে খোলা হতে পারে। তখন মূল বিষয়গুলো ধরে আরও সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা অ্যাকাডেমি (ন্যাপ)। আর এই সিলেবাস অনুযায়ী পাঠ বাস্তবায়নের জন্য সময় পাওয়া যাবে ১ নভেম্বর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৯ দিন।
তবে, সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার ওপর। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব নয়। এজন্য সরকার তৃতীয় ধাপেরও পরিকল্পনা করে রেখেছে। এক্ষেত্রে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অটোপাস দিয়ে উত্তীর্ণ করা হবে। এছাড়া অন্যান্য শ্রেণিতেও অটোপ্রমোশন দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ সোহেল আহমেদ বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে, তা বলতে পারছি না। তবে, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসকে টার্গেট করে আমরা দুটি পাঠ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। অক্টোবরে ক্লাস চালু করা গেলে সময় বেশি পাবো। সেই হিসেবে ৭৬ দিন হাতে পাবো। আর নভেম্বরে চালু হলে ৩৯ দিন সময় পাবো। পরিকল্পনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে সঠিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে পারবো বলে আশা করছি।’ তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অটোপাসের বিকল্প নেই।’
সরকারের পরিকল্পনা জাননে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান খোলার সঙ্গে-সঙ্গে শিক্ষার্থীরা যেন দ্রুত সিলেবাস শেষ করতে পারে, সে লক্ষ্যে বিশেষ পরিকল্পনাও করা হয়েছে।’
একই প্রশ্নের জবাবে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, ‘অক্টোবর-নভেম্বরকে কেন্দ্র করে পাঠ পরিকল্পনা তৈরি করা আছে। মূল বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।’ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে তা বাস্তবায়ন সম্ভব বলেও তিনি মনে করেন।